• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম

মিথির অভাববোধ কুরে কুরে খাচ্ছে তিথিকে

মিথির অভাববোধ কুরে কুরে খাচ্ছে তিথিকে
মিথিকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছে তিথি  -  ছবি : জাগরণ

নাটোরের উত্তরা গণভবনে তিথির নিঃসঙ্গতায় মন গলেনি বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের। পার্ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখে শত চেষ্টা করেও মিথিকে আনতে পারছে না নাটোরের জেলা প্রশাসন। গত ১১ জুলাই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে চিঠি পাঠানো হয় নাটোর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে। সঙ্গীহীন জীবনে ১৬টি ডিম দিয়েছে তিথি। কিন্তু মিথির অভাববোধ তিথিকে এখন কুরে কুরে খাচ্ছে। মিথির কারণে দেখতে পাচ্ছে না তার বাচ্চাদের। তাইতো রাগ ও অভিমানে ইতোমধ্যে ভেঙে ফেলেছে ১১টি ডিম। বর্তমানে ৫টি ডিম অক্ষত অবস্থায় রয়েছে বন্দী খাঁচার মধ্যে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নাটোরের উত্তরা গণভবনের দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য ২০১৭ সালের শেষ দিকে উত্তরা গণভবনে মিনি চিড়িয়াখানা স্থাপন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন। সে সময় ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে একটি নারী ও একটি পুরুষ ময়ূর নিয়ে আসা হয় উত্তরা গণভবনের মিনি চিড়িয়াখানায়। তাদের নাম রাখা হয় তিথি-মিথি। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু গণভবনে আগমনের তিন মাস পরই তিথিকে একা রেখে না ফেরার দেশে চলে যায় মিথি। সকল শোক কাটিয়ে উঠে বন্দী খাঁচার মধ্যে একাই জীবনযাপন করে তিথি।

উত্তরা গণভবনের মালি শাহাদৎ হোসেন জানান, তার দেওয়া খাবার এখনো তিথির নিঃসঙ্গ জীবন বাঁচিয়ে রেখেছে। সম্প্রতি স্ত্রী ময়ূর (তিথি) বন্দী খাঁচার মধ্যেই ১৬টি ডিম দেয়। কিন্তু পুরুষ ময়ূর (মিথি) না থাকার কারণে সে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে পারেনি। উত্তরা গণভবন কর্তৃপক্ষ বিকল্প পন্থায় ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরই মধ্যে তিথি নিজেই ১২টি ডিম ভেঙে ফেলেছে।

সঙ্গীহীন জীবনে ১৬টি ডিম দিলেও রাগ ও অভিমানে তিথি নিজেই ভেঙে ফেলে ১১টি। ৫টি ডিম অবশিষ্ট থাকলেও পুরুষ ময়ূর না থাকায় এই ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হচ্ছে না  -  ছবি : জাগরণ

উত্তরা গণভবনের সহকারী ব্যবস্থাপক খায়রুল বাসার বলেন, জুনের মাঝামাঝি সময়ে স্ত্রী ময়ূর (তিথি) ১৫-১৬টি ডিম দেয়। কিন্তু পুরুষ ময়ূর (মিথি) না থাকার কারণে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়নি। ডিম নষ্ট হয়ে বর্তমানে মাত্র ৫টি রয়েছে। পুরুষ ময়ূর থাকলে অন্তত অর্ধেক বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হলে ময়ূরে উত্তরা গণভবন ভরে যেতে। এতে করে এই চিড়িয়াখানার সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পেত।

গণভবনের সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) জিয়াউর রহমান বলেন, তিথি মোট ১৬টি ডিম পাড়ার পর আমরা পুরুষ ময়ূর চেয়ে গত ১১ জুলাই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একটি চিঠি লিখি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই চিঠির কোনো উত্তর পাইনি। এ কারণে পুরুষ ময়ূর নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।

নাটোর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজন্ম টেকনিশিয়ান (এআইটি) খায়রুল ইসলাম বলেন, উত্তরা গণভবনের ময়ূরের ডিমে ডিম্বাণু রয়েছে, শুক্রাণু নেই। যেহেতু পুরুষ ময়ূর নেই, তাই সেখানে শুক্রাণু অনুপস্থিত। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে হলে অবশ্যই পুরুষ ময়ূর লাগবে। আমরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে যেকোনো চিড়িয়াখানা থেকে একটি পুরুষ ময়ূর আনার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম।

এনআই

আরও পড়ুন