• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৫:৩৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৫:৩৫ পিএম

রাজশাহীর আলোচিত মা-ছেলে হত্যা মামলা

৩ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

৩ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন
রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে রাজশাহী কারাগারে নেয়া হচ্ছে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের  -  ছবি : জাগরণ

রাজশাহীর বাগমারার আলোচিত মা-ছেলেকে গলা কেটে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে তিনজনের ফাঁসি ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে মামলার সব আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

রায়ে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আবুল হোসেন মাস্টার (৫২), হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) ও বিজিবির চাকরিচ্যুত সদস্য আবদুর রাজ্জাক (৩৫)। এর মধ্যে আবুল হোসেন মাস্টার দেউলা রানী রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর হাবিবুরের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আবুল কাশেম। এছাড়া ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত চাকরিচ্যুত বিজিবির সদস্য আবদুর রাজ্জাক (৩৫) রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি (২২), একই গ্রামের লবির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), দুর্গাপুরের খিদ্রকাশিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে রুস্তম আলী (২৬) এবং খিদ্রলক্ষ্মীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির (২৩)।

রায়ের পর আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য এ বছরের এপ্রিলেই মামলাটি জেলা জজ আদালত থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলাটিতে মোট ৫১ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। এরপর গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারার দেউলা গ্রামের নিজ বাড়িতে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে আকলিমা বেগম (৪৫) ও তার ছেলে জাহিদ হাসানকে (২৫) গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আকলিমা বেগমের বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে বাগমারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় নাটকীয় মোড় নেয় এই জোড়া খুনের তদন্ত। তিন দফা বদল করা হয় তদন্ত কর্মকর্তা।

সর্বশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করে। এরপর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসে। পরে ২০১৮ সালের ৩১ মে আদালতে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী দুজন।

তারা হলেন নিহত আকলিমা বেগমের দেবর আবুল হোসেন মাস্টার (৫২) এবং হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) নামের অপর এক ব্যক্তি। আবুল হোসেন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দেউলা রানী রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও তিনি। আর হাবিবুরের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আবুল কাশেম।

মামলায় অভিযুক্ত অন্য পাঁচজন হলেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে বিজিবির চাকরিচ্যুত সদস্য আবদুর রাজ্জাক (৩৫), একই উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি (২২), একই গ্রামের লবির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), দুর্গাপুরের খিদ্রকাশিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে রুস্তম আলী (২৬) এবং খিদ্রলক্ষ্মীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির (২৩)। তারা সবাই ভাড়াটে খুনি হিসেবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। এর মধ্যে গ্রেফতারের পর তিনজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।

এনআই

আরও পড়ুন