• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৮:৪৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৮:৪৬ এএম

আসছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ, তবু দাম বৃদ্ধি

আসছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ, তবু দাম বৃদ্ধি

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানিতে ভারত সরকার ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য (এমইপি) ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণের পর এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

ভারত থেকে আমদানিকৃত পেয়াঁজের দাম বৃদ্ধির কারণে টেকনাফের স্থল বন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রচুর পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। তবে এসব পেঁয়াজ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিক্রি করছে না। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। শুধু তাই নই, টেকনাফ দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হলেও সুফল পাচ্ছে না টেকনাফবাসী। এখনো দাম বাড়তি রয়েছে। ব্যবসায়ীদের হাতে মজুদ থাকা পেঁয়াজও বাড়তি দামে বিক্রি করে অস্থিরতা বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে যার মতো দামে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
 
জানা যায়, হঠাৎ করে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করায় দেশে ২৫-৩০ টাকা মূল্যের পেয়াঁজ ৭০-৭৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। হঠাৎ পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্ব গতির কারণে প্রভাব পড়েছে ক্রেতাদের ওপর। এর মধ্যে সুখবর হলো মিয়ানমার থেকে প্রচুর পেঁয়াজ টেকনাফে স্থল বন্দর দিয়ে আমদানি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ট্রলার ভর্তি পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন টেকনাফের বেশ কয়েকজন আমদানিকারকরা। তারা টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে এই পেঁয়াজ আনছেন। এসব পেয়াঁজ কক্সবাজার, চট্টগ্রামের ব্যবাসয়ীরা ট্রাকে ট্রাকে দেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে মিয়ানমারের এই পেঁয়াজ টেকনাফের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি না করার অভিযোগ উঠেছে।  
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, দুই কারণে মিয়ানমার থেকে আমদানি হচ্ছে পেঁয়াজ। একটি হচ্ছে, ভারতে টনপ্রতি ৮৫০ ডলার হলেও মিয়ানমারে পেঁয়াজের দাম এখন পর্যন্ত ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ মার্কিন ডলারে বিক্রি হচ্ছে। 

টেকনাফ কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আগস্ট মাসে আমদানি হয়েছে শুধুমাত্র ৮৪ এর বেশি মেট্রিক টন পেয়াঁজ। কিন্তু বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত পেয়াঁজ আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৩৯২ মেট্রিক টন। সব কিছু ঠিক থাকলে ও বাজারের চাহিদা পূরণ করতে আরো প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি করা হবে বলেও জানা যায়।

আমদানিকারকরা বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রায় সাড়ে ৯শ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুদ করেছেন। এর মধ্যে মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে পেঁয়াজ বোঝাই চারটি ট্রলারে আরও ১৫০ মেট্রিক টনের মতো পেঁয়াজ সমুদ্রপথে আছে। দু-তিন দিনের মধ্যে সেগুলো স্থলবন্দরে এসে পৌঁছাতে পারে। এরপর পেঁয়াজগুলো খালাস করে দেশের অভ্যন্তরে নেওয়ার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।

তারা আরো বলেন, মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম বেশি। তবে বাংলাদেশের বাজারের দাম আরও বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন। এখন মিয়ানমারের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪৩ টাকা। এ পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পৌঁছাতে পরিবহন, শ্রমিকসহ কেজি প্রতি ৩/৪ টাকার মতো খরচ হচ্ছে।

এদিকে, কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা। এভাবে লাগানহীন দাম বাড়ার বিষয়টিকে ব্যবসায়ীদের কারসাজি বলছেন ভোক্তারা। দ্রুত দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

টেকনাফ বাজারের ব্যবসায়ী সাদ্দাম, আবদুর রাজ্জাক ও গফুর সওদাগর বলেন, টেকনাফের ব্যবসায়ীদের কাছে মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ টেকনাফের ব্যবসায়ীদের বিক্রি করে না। চট্টগ্রাম থেকে পেঁয়াজ টেকনাফে আনতে হয়। ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী মেসার্স জিন্নাহ এন্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী মো. শওকত আলী জানান, মিয়ানমারের বাজারেও মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় এবং পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বৃদ্ধিতে স্থানীয় বাজারেও মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুধবারেও প্রায় ২০০ টন পেঁয়াজ আমদানি ও দেশের অভ্যন্তরে সরবরাহ হয়েছে। 

এ ব্যাপারে স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফের মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এবং বন্দরের অভ্যন্তরে ভিডিও বা ছবি তুলতে বাধা প্রদান করেন।

টেকনাফ স্থলবন্দর কাস্টমস সুপার আবছার উদ্দিন জানান, সরকারি নির্দেশনা থাকায় বন্দর ও কাস্টমসের যাবতীয় কার্যক্রম অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে আমদানি করা এসব পেঁয়াজ দেশের বাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্দরের অভ্যন্তরে কোন পেঁয়াজ জমা রাখা হচ্ছে না। 

কেএসটি

আরও পড়ুন