• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯, ১২:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯, ১২:০৪ পিএম

উদ্ধার হওয়া খাস জমিতে নতুন ঠিকানা পেল ৫শ ভূমিহীন

উদ্ধার হওয়া খাস জমিতে নতুন ঠিকানা পেল ৫শ ভূমিহীন

দেশের একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না বর্তমান সরকারের এ নীতির সমর্থনে গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় বেহাত হওয়া খাসপুকুরের জমি উদ্ধার করে ৫শ ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে ঠিকানাহীন গৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল মানুষেরা পেয়েছে নতুন ঠিকানা।

ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার মহিষডোবা পুকুর এবং পার্শ্ববর্তী বালিয়াদীঘি দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে ছিল। ওই ২ খাস পুকুরের পাড়ে গড়ে উঠেছে একটি নতুন বসতি। এখানে ২শ ছিন্নমূল, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার সরকারি টিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ পেয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন।

এখানকার বাসিন্দা মুফতি হাফিজুর রহমান,লাকি বেগম ও আ: মজিদ বলেন,  আমরা আগে নেকমরদ বাজারের বাগানবাড়িতে বসবাস করছিলাম।কিছুদিন পূর্বে সরকার ওই হাটের জমি  উদ্ধার করে নেয়।আমরা শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসন আমাদের মহিষডোবা বালিয়া পুকুরে পুনর্বাসন করে।

একইভাবে ঘনশ্যামপুর গ্রামের খাস পুকুরের ধারে ২৮টি দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জমি পেয়ে আদিবাসীরা মাথা গোজার ঠাঁই নির্মাণ করছেন। ইতোমধ্যে সেখানে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বরাদ্দ পাওয়া আদিবাসীরা শুকরা পাহান, ময়না পাহান বলেন, আগে মানুষের জমিতে থাকতে গিয়ে বিভিন্নভাবে মানুষের কটুকথা সহ্য করতে হতো। জমি পাওয়ায় সেই ভাবনা এখন আর থাকল না। সেজন্য সরকার ও এসিল্যান্ড স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।

জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রাউতনগর গুচ্ছগ্রাম, বাসনাহার গুচ্ছগ্রাম, মানিকা দিঘী গ্রচ্ছগ্রাম, মলানীদিঘী গুচ্ছগ্রাম ও রন্ধনদিঘী পাড়ে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। এসব গুচ্ছগ্রামে ২শ ১১ জন ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। জমি ও ঘর পাওয়ার পরও ভূমিহীনদের যে স্বপ্ন অপূর্ণ ছিল- বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে তা পূর্ণ হয়েছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য চলতি বছর ঘনশ্যামপুর গ্রামে ২টি খাসপুকুর, মহেষপুর গ্রামে ১টি খাসপুকুর, ব্রহ্মপুর গ্রামে ১টি খাসপুকুর, করনাইট গ্রামে ২টি ও গরকতগাঁও গ্রামে ১টি মোট ৭টি পুকুরপাড়ের ২০ একর জমি স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছ থেকে উদ্ধার ৩শ ৬০ জন ভূমিহীনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। সরকারি খরচে বাড়িঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য গুচ্ছগ্রামের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিগত ২ বছরে রাণীশংকৈল উপজেলা এলাকায় প্রায় ৩৪ একর খাস জমি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে যার অনুমানিক মূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা।এরমধ্যে নেকমরদ বাজারের ৫ একর জমিও দখলমুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, বর্তমান সরকার চান দেশের কোন মানুষ যেন গৃহহীন না থাকে। এই নীতির আলোকে ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ উপজেলায় বেহাত থাকা খাস জমি উদ্ধারের কার্যক্রম চলছে। এরই অংশ হিসেবে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ হাট এবং বিভিন্ন পুকুরের কৃষি ও অকৃষি মিলে প্রায় ৩৪ একর খাস জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এসব জমিতে আমরা আম্রয়ন প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম এবং জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন মানুষকে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। রাণীশংকৈল উপজেলা এসিল্যান্ড সোহাগ সাহার নেতৃত্বে এসব জমি উদ্ধার করে স্থানীয় দুঃস্থ অসহায় ও ভূমিহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। আশা করছি রানীশংকৈল উপজেলায় কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না।

কেএসটি

আরও পড়ুন