জয়পুরহাটের কচুর লতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন রফতানি হচ্ছে বিদেশে। কচুর লতি চাষ চলছে বারো মাস।
অনেক অনেক দিন আগের কথা। সে সময় মধ্যবিত্ত বা ধনিক শ্রেণির মানুষের মাঝে শাকপাতা বা কচু-ঘেঁচুর কদর ছিল না বললেই চলে। তখনকার সময় মনে করা হতো, দরিদ্র শ্রেণি-পেশার মানুষ বা অভাবী লোকজনই এগুলো খেত। তখন পাড়া-মহল্লার খালা-চাচিরা ফসলি জমির আইলে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব শাকপাতা ও কচুর লতি কুড়িয়ে বেড়াতেন। তারা অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত হলেও এই সবজি যে পুষ্টিগুণে ভরপুর, এতটুকুন বুঝতেন।
আজ থেকে ২০-২২ বছর আগের কথা। সে সময় জেলার পাঁচবিবি উপজেলায় গুটি কয়েক কৃষক এই লতির চাষ শুরু করেন। কালের বিবর্তনে সময়ের ব্যবধানে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় এ লতির চাষ এখন বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। যে উপজেলায় শুরু সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই চাষাবাদের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ৪৫০ হেক্টরে। গত ১৭-১৮ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২০০ হেক্টর। এ মৌসুমে জেলা সদরে ৩৫০ এবং পাঁচবিবি উপজেলায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে এই কচুর লতি। ধারণা করা হচ্ছে, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার মে. টন ছাড়িয়ে যাবে। প্রতি বিঘায় এই চাষাবাদে খরচ লাগে ২০-২২ হাজার টাকা। লতি বিক্রয় হয় ১ লাখ টাকারও বেশি।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ আধিদপ্তরের উপপরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায় বলেন, পুষ্টিগুণসম্পন্ন হওয়ায় এই কচুর লতি এখন প্রথম শ্রেণির সবজি হিসেবে সর্বমহলে গ্রহণীয়। দেশের বাজার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সৌদি আরব, দুবাই, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশেই এই কচুর লতি রফতানি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এনআই