শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে এক কিশোরকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে উলঙ্গ করে নারিকেল গাছে বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হাসপাতালে গিয়ে কিশোরকে দেখেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের বাড়ি থেকে একটি মোবাইল সেট চুরি হয়। এ ঘটনায় তারা একই গ্রামের মকবুল হোসেনের তের বছর বয়সী নাতি মনিরুল ইসলাম ওরফে পুতুরাকে সন্দেহ করে। এ সন্দেহের জেরে রোববার মনিরুলকে রাস্তা থেকে ধরে পড়নের লুঙ্গি খুলে কাঁধে ঝুলিয়ে টেনে-হিচড়ে সালামের বাড়িতে নিয়ে যায় সালামের পুত্র ইসহাক (৩০) ও রবিউল (২০)সহ অন্যরা। পরে তাকে বাড়ির নারিকেল গাছে পেছনে হাতমোড়া দিয়ে রশিতে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে কিশোর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে খবর জানাজানি হওয়ার পরপরই অনেক সুপারিশ করে তাকে নানার বাড়ির লোকজন ছাড়িয়ে নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এদিকে, বিষয়টি নালিতাবাড়ী থানায় গড়ালে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে গিয়ে কিশোরকে পরিদর্শন করে জরুরি ব্যবস্থা নেন। এসময় নির্যাতনের শিকার কিশোরের নানা মকবুল হোসেন বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় নামীয় ৩ জনসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ইসাহাক ও রবিউলকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহুরুল হক জানান, নির্যাতনের শিকার কিশোরের পিতা ও মাতার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বর্তমানে কিশোরের মা ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করেন এবং কিশোরটি তার নানার আশ্রয়ে বড় হচ্ছিল।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল জানান, এ ঘটনায় দ্রুত দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
কেএসটি