শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে নড়িয়া রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার জায়গা ধসে গেছে। এতে একটি মসজিদ, বেশ কয়েকটি বসতবাড়িসহ গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ ঘটনায় মঙ্গল বেপারী নামের এক ব্যক্তি হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নড়িয়া উপজেলার সাধুর বাজার এলাকায় এ ধসের ঘটনা ঘটে। এতে আশপাশের লোকদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা নিজেদের ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানা যায়, এক সপ্তাহ যাবৎ পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে নড়িয়া রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার জায়গা ধসে পড়েছে। কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ বলেন, সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে ১০০ মিটার জায়গা নিচের দিকে দেবে গেছে। এতে একটি মসজিদ, পাকা বাড়িঘরসহ অনেক গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, ঘটনার সাথে সাথে আশপাশের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, ‘আমরা নিয়মিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করি। কিন্তু কোথাও কোনো ফাটল দেখিনি। হঠাৎ সন্ধ্যায় নড়িয়া রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার জায়গা ধসে পড়েছে। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। জরুরি ভিত্তিতে ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত বছর নড়িয়ার পদ্মা নদীতে প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে নড়িয়া উপজেলার প্রায় সাড়ে ছয় হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন ঠেকাতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ওই প্রকল্প থেকে ৫৫২ কোটি টাকা নড়িয়ার সুরেশ্বর হতে জাজিরার কাইয়ুম খার বাজার পর্যন্ত ৮ দশমিক ৯ কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষার কাজে ব্যয় করা হবে। বাকি টাকা দিয়ে নদীর খননকাজ করা হবে।
এনআই