• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০১৯, ০৪:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২, ২০১৯, ০৪:০৩ পিএম

বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করলেন রাষ্ট্রপতি

বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করলেন রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ খুলনার বানৌজা তিতুমীরে অনুষ্ঠিত জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন  -  ছবি : জাগরণ

প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিকস কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বুধবার (২ অক্টোবর) খুলনায় আনুষ্ঠানিকভাবে বানৌজা তিতুমীরকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু ভারত ও যুগোস্লাভিয়া থেকে বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করেন এবং দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে দ্য টেরিটরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোন্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বর্তমান সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে নৌবহরে সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌবাহিনীর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নৌঘাঁটি কমিশন লাভ করেছে। এছাড়া সমুদ্রে নজরদারি ও টহল জোরদার করতে আরও দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ক্রয় করা হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পটুয়াখালীতে এভিয়েশন সুবিধা-সংবলিত নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি শের-ই-বাংলা নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রজন্মের নৌসদস্যরা মহান দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর। দীর্ঘ ৪৪ বছর যাবৎ প্রশাসনিক, লজিস্টিকস সহযোগিতাসহ নৌসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই ঘাঁটি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবীন নাবিক সৃষ্টির দক্ষ সূতিকাগার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এই ঘাঁটি। 

উল্লেখ্য, ১৮৩২ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সর্বপ্রথম বাঁশের কেল্লার মাধ্যমে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে শহীদ হন সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীর। পরবর্তী সময়ে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই ঘাঁটির নামকরণ করা হয় ‘বানৌজা তিতুমীর’। ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিতুমীরের নামে এই ঘাঁটি কমিশন করেন এবং ‘নেভাল এনসাইন’ প্রদান করেন। যাত্রা শুরুর পর থেকে এই ঘাঁটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিষ্টিকস কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

এর আগে সকালে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাষ্ট্রপতি খুলনাস্থ বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী তাঁকে স্বাগত জানান। এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র, নৌ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, নৌবাহিনীর সকল নৌ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দেশি-বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এনআই

আরও পড়ুন