• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০১৯, ০৮:৪৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৫, ২০১৯, ০৮:৪৮ এএম

বঙ্গোপসাগরে দুদিনে ৩৮ ভারতীয় জেলে আটক

বঙ্গোপসাগরে দুদিনে ৩৮ ভারতীয় জেলে আটক

মোংলার সুন্দরবন উপকূল সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের উপদ্রব ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ভিন দেশি এসব জেলেদের অনুপ্রবেশের কারণে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে এদেশের জেলেরা। স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, ভারতীয় জেলেদের উৎপাতে এদেশীয় জেলেদের মাছ শিকার মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এদিকে মাত্র গত দুই দিনের ব্যবধানে বঙ্গোপসাগরের দেশীয় জলসীমা থেকে তিনটি ট্রলারসহ ৩৮ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। 

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকালে ২৩ ভারতীয় জেলেকে মামলা দিয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার আটক ১৫ ভারতীয় জেলেকেও জেল হাজতে পাঠানো হয়। 

মোংলা পৌর শহরের প্রধান মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. রবিউল ইসলাম, আল-আমিন ও মো. জসিম অভিযোগ করে বলেন, বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জেলেদের উৎপাতে বর্তমান ইলিশ মৌসুমেও দেশীয় জেলেদের মাছ শিকার ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তারা আরো বলেন, আগে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমা ঘেঁষে বা কিছুটা ভিতরে ঢুকে ইলিশ শিকার করতো। আর বর্তমানে শুধু সাগর নয়, অবাধে উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি এসে মাছ শিকার করছে। অধিকাংশ সময়ই তারা গোপনে মাছ শিকার করে চলে যায়। বিদেশি জেলেরা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে ট্রলারে বসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতা চোখ রাখে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ভারতের কাকদ্বীপ এলাকা কাছাকাছি কাছে হওয়ায় সেখানকার বিপুল সংখ্যক জেলে এদেশের জলসীমায় মাছ ধরতে আসে। প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশি জেলেরা বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায়  ট্রলার ও নৌকায় করে সামুদ্রিক নানা ধরনের মাছ আহরণ করে থাকেন। সমুদ্র শান্ত থাকায় এ সময়টা জেলেদের মাছ আহরণের উপযুক্ত মৌসুম। 

বাংলাদেশের জলসীমায় সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বেশি তাই এ সময়টাতেই মাছ লুণ্ঠনের টার্গেট থাকে ভীন দেশি (ভারতীয়) জেলেদের। আর সেই সুযোগ বুঝোই প্রতিবেশী দেশ ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের জেলেরা অত্যাধুনিক ট্রলার, মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করে থাকে। তারা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতায় চোখ রাখে এবং নৌবাহিনী আসতে দেখলেই দ্রুত পালিয়ে তাদের সামীনায় চলে যায়।

কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন’র (মোংলা সদর দপ্তর) অপারেশন কর্তকর্তা লে. ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘দেশীয় জেলেরা সমুদ্রের ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরেতে পারে। আর ভারতীয় জেলেরা সমুদ্রসীমার প্রায় দেড়শ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে থাকে। তারা দ্রুতগামী নৌযান ও কারেন্ট জালসহ  জিপিএস  নামক বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে। এসব জেলেদের ধরতে নৌবাহিনীর পাশাপাশি তারাও সাগরে অভিযান অব্যাহত রেখেছে’। 

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, সমুদ্রসীমা লঙ্গনের অভিযোগে এ পর্যন্ত আটক সকল জেলেই ভারতীয় নাগরিক। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে এফ,বি স্বর্ণদ্বীপ ও এফ,বি আমৃত্রে নামের দুটি ফিশিং ট্রলারসহ ২৩ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দিগরাজ নৌঘাঁটির সদস্যরা। 

কেএসটি

আরও পড়ুন