• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৮:৫৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৮:৫৯ এএম

বেঁচে গেল শতাধিক শিক্ষার্থী

সন্ধ্যা নদীতে হারিয়ে গেল স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টারটি

সন্ধ্যা নদীতে হারিয়ে গেল স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টারটি

বরিশালের উজিরপুরের গুঠিয়ায় আশোয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারটি সন্ধ্যা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিদ্যালয়টি পূজার জন্য বন্ধ থাকায় বেঁচে গেল শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের প্রাণ। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে মানুষের চোখের সামনেই বিদ্যালয়টি সন্ধ্যা নদীগর্ভে হারিয়ে যায়।

ইতিপূর্বে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টারটি রক্ষায় এলাকার মানুষ নানা রকমের চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। ৩ মাস পূর্বে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম নদী ভাঙন পরিদর্শনকালে ওই ভবনটি সচোখে দেখে তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এর এক মাসের মাথায় ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙনরোধে অস্থায়ী প্রকল্পর মাধ্যমে ঠিকাদার ৪৩শত বস্তা বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল।

জানা গেছে, সিডরের পরে ভাঙন কবলিত আশোয়ার গ্রামের মানুষের আশ্রয়নের জন্য ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার ভবনটি নির্মাণ করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত কড়াল গ্রাসে হানুয়া ও আশোয়ার গ্রামের প্রায় ২ শত পরিবার নদী গর্ভে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়। আর শেষ পর্যন্ত হুমকির মুখে পড়ে বিদ্যালয়টি। গত কয়েকদিন ধরে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যায়লটি রক্ষার জন্য মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছিল।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোসলেম আলি হাওলাদার জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে সকলের চোখের সামনেই এ বিদ্যালয়টি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের ভিতরের আংশিক মালামাল উদ্ধারে সক্ষম হলেও বেশিরভাগ ভবনের সাথে নদীতে বিলীন হয়েছে।

ওই গ্রামের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম জানান, গত কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙন আমাদের বাড়ি ঘর গ্রাস করে নিলেও আমরা প্রায়ই সাইক্লোন সেল্টারটিতে আশ্রয় নিতে পেরেছি। কিন্তু শেষ আশ্রয়স্থলটিও নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ায় আমরা এখন নিঃস্ব। ভবিষ্যতে ঝড় বন্যায় কোথায় আশ্রয় নিবো তা ভেবে পাচ্ছি না। মনে হয় আমরা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদিস হালদার বলেছেন, পূজার কারনে বিদ্যালয়টি বন্ধ রয়েছে। সে কারণে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। নয়তো বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল।

স্থানীয় নাজিম খলিফা, আবুল হোসেন ফকির, জহির হাওলাদার ক্ষোভের সহিত অভিযোগ করে বলেন বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য সরকারি সর্বশেষ প্রচেষ্টা জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু এগুলো ভাঙন কবলিত স্থানে না ফেলে কোন মতে দায় সারাভাবে মাটির উপর অংশে ফেলানো হয়। এ কারণেই বিদ্যালয়টি রক্ষা করা গেল না।

উপেজেলা শিক্ষা অফিসার তাসলিমা বেগম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে অবগত করা হয়েছে।

কেএসটি

আরও পড়ুন