• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ১১:১৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০১৯, ১১:১৯ এএম

৪ মাসে ৪০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করলেন গুরুদাসপুরের ইউএনও

৪ মাসে ৪০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করলেন গুরুদাসপুরের ইউএনও

কখনো বর যাত্রী, কখনো কনে যাত্রী, কখনো আবার শিক্ষার্থী বা সাধারণ মানুষ সেজে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গত ৪ মাসে প্রায় ৪০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন এবং বখাটেদের ধরে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন। 

বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পাওয়া প্রত্যেকটি মেয়েই এখন নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। বখাটেদের উৎপাত আর দেখাও যায় না। এমনকি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পাওয়া মেয়েরা রাস্তা ঘাটে বখাটেদের দ্বারা কেউ হয়রানির শিকার হচ্ছে কি না সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে।

তাছাড়া বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিং প্রতিরোধে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে চোখে পড়বে বাল্যবিবাহ, মাদক, জুয়া ও ইভটিজিং প্রতিরোধে বিভিন্ন বিলবোর্ড। উপজেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সম্প্রতি বাল্যবিবাহ, মাদক, জুয়া ও ইভটিজিং প্রতিরোধে ইউএনও তমাল হোসেনের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিল বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ, মাদক ও ইভটিজিং কি এবং এর ফলে কি শাস্তির বিধান আছে তা উল্লেখ রয়েছে এই বিল বোর্ডে। 

এছাড়াও ০১৩১৫-১৭১৩৫০ নম্বরটি যেন খুব বেশি পরিচিত হয়ে উঠেছে অত্র উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, জন প্রতিনিধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণের কাছে। এই বিশেষ নম্বরটিকে বাল্যবিবাহ, মাদক, জুয়া এবং ইভটিজিং প্রতিরোধ নম্বর হিসেবে ব্যাপক প্রচারণা রয়েছে। 

সম্প্রতি চাপিলা ইউনিয়নের ধানুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী নিজের বাল্য বিয়ে নিজেই বিল বোর্ডে দেওয়া নম্বরে ফোন করে ইউএনওকে অনুরোধ করে তার বিয়ে বন্ধ করার জন্য। পরে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে সাহসিকতার পুরস্কার। 

এই অনন্য উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে থেকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান এবং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ইউএনও স্যারের অনন্য উদ্যোগে তিনি সারথী হিসেবে রয়েছেন। বাল্যবিবাহ, মদক, জুয়া ও ইভটিজিং প্রতিহত করতে ইউএনও স্যারের নির্দেশনায়  ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তিনি। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন বলেন, এরইমধ্যে উপজেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাল্যবিবাহ, মাদক, জুয়া এবং ইভটিজিং প্রতিরোধ বিষয়ক বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ একটি অভিশাপ যার ফলে অল্প বয়সেই মেয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, পাশাপাশি সুন্দর ভবিষ্যৎটাও নষ্ট হয়ে যায়। মেয়েরা যেন তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বিঘ্নে যেতে পারে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও নিরাপদ থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই সামাজিক অবক্ষয় রোধে সর্বাধিক গুরুত্বের সাথে বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে।

কেএসটি

আরও পড়ুন