• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ১১:৪৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ১১:৪৪ এএম

ময়মনসিংহ আ.লীগের হালচাল

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতেই চলছে ১৩ উপজেলার কার্যক্রম  

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতেই চলছে ১৩ উপজেলার কার্যক্রম  

ময়মনসিংহের ১৩ উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ দিয়ে চলছে। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও কোথাও অর্ধযুগ অথবা দেড়যুগও পার হয়েছে। বছরের পর বছর এভাবে চললেও সম্মেলনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নেতাদের। ফলে অনেক উপজেলায়ই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ছন্নছাড়া। নতুন নেতাদের দলে সুযোগ করে না দেয়ায় ক্ষোভের মাত্রা বাড়ছে। 

জানা যায়, ১০ উপজেলায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দিয়ে বিভিন্ন সময় কমিটি হয়। আর আহ্বায়ক কমিটি করা হয় বাকি তিন উপজেলায়। তাদের মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম আহ্বায়কসহ মারা গেছেন ছয়জন।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, গত ১০ অক্টোবর মহানগর ও বিভাগের চার জেলাকে নিয়ে ঢাকায় সভা হয়েছে। সেখানে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বিভাগের উপজেলা সম্মেলন শেষ করার। আর ময়মনসিংহ জেলার উপজেলা সম্মেলন চলতি মাসেই শেষ হবে। 

ৃদলীয় সূত্রে জানা যায়, হালুয়াঘাট উপজেলায় ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের পরের বছর ১৩ অক্টোবর প্রমোদ মানকিন সভাপতি ও অধ্যক্ষ মো. খোরশেদ আলম ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুজনই এখন প্রয়াত। এখন ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চলছে এ উপজেলা আওয়ামী লীগ। ধোবাউড়া উপজেলায় ২০১৪ সালের ১০ মার্চ সম্মেলন হয়। এর চার মাস পর অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নানকে সভাপতি ও প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে সভাপতি মৃত্যুবরণ করেছেন। গৌরীপুরে ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল। এর দুই মাস পর সভাপতি ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান ফকির ও সাধারণ সম্পাদক বিধু ভূষণ দাসসহ ৬৭ জনের কমিটি হয়। ২০১৬ সালের ২ মে সভাপতির মৃত্যু হলে সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. হেলাল উদ্দিন আহাম্মেদ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন। এ উপজেলায় ১৬ বছর আগে সম্মেলনের পর অ্যাডভোকেট এস এম ইসহাককে সভাপতি ও এমদাদুল হক মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হয়। সভাপতি দুই বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। এখন ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আবদুস সালাম সরকার। মুক্তাগাছায় সর্বশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয় ২০১৩ সালে। কমিটির সভাপতি কে এম খালিদ বাবু সভাপতি ও বিল্লাল হোসেন সরকার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এখনো। ২০০৩ সালে ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এর আরও দুই বছর পর মোসলেম উদ্দিনকে সভাপতি ও আবদুল মালেক সরকার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ত্রিশালে আহ্বায়ক কমিটি করা হয় ২০১২ সালে। সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট রেজা আলীকে আহ্বায়ক করার পর এভাবেই চলছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। ২০০৩ সালে সর্বশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। তখনকার সভাপতি হাসিম উদ্দিনের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন সাবেক এমপি আবদুস সাত্তার। এরপর ২০১৫ তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক হওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ ছাড়তে হয়। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন রফিকুল ইসলাম বুলবুল। ২০০৫ সালে নান্দাইলে কাউন্সিলের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হয়। সাবেক এমপি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম ওই কমিটির সভাপতি। তবে ২০১২ সালে আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি ওই কমিটি ভেঙে দিয়ে বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বঘোষিত সভাপতি। গফরগাঁওয়ে ১৯৯৬ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হয়। তখন সভাপতি হন আমির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক দুলাল উদ্দিন আকন্দ। প্রায় দুই বছর আগে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বাদল। ২০০৩ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হয় ভালুকায়। সাবেক এমপি ডা. এম আমানউল্লাহ এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গোলাম মোস্তফা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুন করে কমিটি না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘদিন দল করেও পদের মুখ না দেখায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ হতাশা বিরাজ করছে। 

কেএসটি

আরও পড়ুন