ভারসাম্যহীন বাবাকে ১০ বছর শিকলবন্দি করে টয়লেটে রেখেছিল ছেলে ও তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াবদা বাজারে। শিকলবন্দি আমির আলী ওয়াবদা বাজারের আমির আলী সুপার মার্কেটের মালিক। শিকলবন্দি আমিরের এক ছেলে দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিকলবন্দি আমির আলীকে উদ্ধার করে তার বাড়িতেই ভাল একটি ঘরে বাসস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন।
আমির আলীর ভাগিনা রহিম জানায়, দীর্ঘ ১০ বছর যাবত তার মামা আমির আলীকে কোন চিকিৎসা না করিয়ে নোংরা জায়গায় বন্দি করে রেখেছিল তার ছেলে, মেয়ে এবং স্ত্রী।
শিকলবন্দি আমির আলীর ছেলে মঞ্জু আলী এবং স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, আমির আলী ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে এমনভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ১৪ বছর আগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। তারপর আর কোন চিকিৎসা করা হয়নি। আমির আলীকে নোংরা জায়গায় বন্দি রাখার ব্যাপারে পরিবারের লোকজন ভুল শিকার করেছেন। পরবর্তীতে আর তাকে এমনভাবে রাখা হবে না বলে ইউএনও ও এলাকাবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন জানায়, দীর্ঘ ১০ বছর আমির আলীকে তার পরিবারের লোকজন একটি অস্বাস্থ্যকর কুড়ে ঘরে তাকে শিকলবন্দি করে রেখেছিল। সেই ঘরে বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমতো। শুধু তাই নয় যে ঘরে আমির আলীকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, সেই ঘরেই তার শোয়ার জায়গা এবং টয়লেট স্থাপন করা হয়েছিল। যে পাত্র দিয়ে টয়লেটের কাজ সারতো, সেই পাত্র দিয়েই তাকে আবার পানি পান করতে হতো। ভাঙা কুড়ে ঘরে টয়লেট, গোসল, খাবারসহ পোকা মাকড়ের কামড় খেয়েই কাটিয়েছে ১০ বছর।
কেএসটি