• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ১০:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ১০:৩২ পিএম

ভাইকে ফাঁসানোর জন্য স্ত্রীকে হত্যা

ভাইকে ফাঁসানোর জন্য স্ত্রীকে হত্যা
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত নিহত সুফিয়া বেগমের স্বামী আলাল উদ্দিন  -  ছবি : জাগরণ

ঋণ থেকে মুক্ত হওয়া ও বড় ভাইকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য মাদকাসক্ত ছেলেকে সাথে নিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ একটি বিলের কচুরিপানার নিচে রাখা হয়। আদালতে এমন রোমহর্ষক তথ্য দিলেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা পূর্বপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে আলাল উদ্দিন টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। ওই হত্যার ঘটনায় আলাল উদ্দিনের বড় ছেলে মাদকাসক্ত শরিফুল ইসলাম ও নিহতের বড় ভাই আব্দুল মোতালেবের ছেলে স্বপন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যার সাথে নিহতের স্বামী, ছেলে ও তার ভাইয়ের ছেলে জড়িত থাকার কথা জানান পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। তিনি বলেন, সোমবার (১৪ অক্টোবর) মির্জাপুর উপজেলার আজগানা এলাকার আউলিয়াবাদ এলাকায় বিল থেকে সুফিয়া বেগম নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের ভাই মেছের আলী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে পুলিশের বিভিন্ন সোর্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে নিহতের স্বামী আলাল উদ্দিন, ছেলে শরিফুল ইসলাম এবং নিহত ওই নারীর ভাইয়ের ছেলে স্বপন মিয়াকে কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা থেকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, আলাল উদ্দিনের সাথে তার বড় ভাই মিনহাজ উদ্দিনের দীর্ঘদিন ধরে জমি-সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। এছাড়া তার স্ত্রী বিভিন্ন এনজিও থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন, যা পরিশোধ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তখন তিনি ফন্দি আঁটতে থাকেন কীভাবে দুটো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তখন তিনি স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন, যাতে ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এছাড়া বড় ভাইকেও হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া যাবে।

এক ঢিলে দুই পাখি শিকার হবে। তাই তিনি পরিকল্পনামতো মাদকাসক্ত বড় ছেলে শরিফুল ও স্ত্রীর ভাইয়ের ছেলে স্বপনকে সাথে নিয়ে ১৪ অক্টোবর ভোর রাতে সুফিয়া আক্তারকে বাড়ির পাশে আউলিয়া বিলে নিয়ে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে লাশ কচুরিপানার নিচে রেখে দেন।

টঙ্গাইলের পুলিশ সুপার রঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘হত্যার দুই দিনের মধ্যে আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটন করে মূল হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। হত্যার সাথে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে অতি দ্রুত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হবে।’

এনআই

আরও পড়ুন