• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ১০:০১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ১০:০৩ এএম

চাটমোহরে অবৈধ সোঁতি জাল দিয়ে চলছে মাছ নিধন

চাটমোহরে অবৈধ সোঁতি জাল দিয়ে চলছে মাছ নিধন

পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন নদী ও বিলে অবৈধ সোঁতি জাল দিয়ে চলছে সব আকারের মাছ নিধন। বিলুপ্ত হচ্ছে মাছের বংশ। এদিকে, সোঁতি জালের বেড়ার কারণে আবাদি জমি থেকে পানি নামছে ধীরে। রসুন ও সরিষার আবাদ পিছিয়ে পড়ায় ফলন নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গুমানী নদীর ধর্মগাছা ব্রিজ, মুনিয়াদীঘি কৃষি কলেজ, ছাওয়ালদহ, চিনাভাতকুর কবরস্থান, কাটানদীর পাইকপাড়া পয়েন্ট, ডেফলচড়া সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আবার এ মাছ হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছের ব্যাপারিরাও ভিড় করছেন সোঁতি জাল দিয়ে যেখানে মাছ ধরা হচ্ছে সেখানে। বিকাল থেকে শুরু করে শেষ রাতেও চলে বেচা-কেনা।

অভিযোগ উঠেছে, সোঁতি জালের কিছু মাছ যাচ্ছে বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা দপ্তরসহ বিশেষ কিছু পেশাজীবীর ঘরে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধর্মগাছা ব্রিজের অদূরেই গুমানী নদীর তিনভাগ ঘিরে দেয়া হয়েছে বাঁশ-জালের বেড়া। এক পাশে ফাঁকা রেখে পাতা হয়েছে সোঁতি জাল। এ জালেই আটকা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির ও আকারের মাছ। তাজা রাখার জন্য জালে জিইয়ে রাখা হচ্ছে মাছ।

এলাকাবাসী সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোঁতির নৌকায় জেলেদের দেখা গেলেও পর্দার আড়ালে রয়েছে চিহ্নিত একটা সুবিধাবাদি চক্র। 

এদিকে, কৃষকরা জানায়- সোঁতি জালের বেড়ার কারণে আবাদি থেকে ধীরে নামছে পানি। এতে পিছিয়ে পড়বে সরিষা ও রসুনের আবাদ এবং বোরো ধানের আবাদও পিছাবে। 

নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ভাষ্য, সোঁতি জালের বেড়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানির স্বাভাবিক গতি। বেড়া সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র স্রোত। ভাঙনের মুখে পড়েছে সংলগ্ন বসতবাড়ি ও আবাদি জমি।

এদিকে, সোঁতি জাল অপসারণের জন্য অভিযান চালাচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। 

স্থানীয়রা জানায়, প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান লোক দেখানো। অভিযানের সঙ্গে জড়িতরা ঘটনাস্থল ত্যাগের দুই-তিন ঘণ্টা পরই আবার জাল মেরামত করে পুরোদমে চলে মাছ নিধন। অভিযানের সময় সোঁতি জালের দুই-একটা বাঁশ কেটে দেয়া হচ্ছে সঙ্গে জালের কিছু অংশ। কিন্তু জাল-বাঁশের পুরো বেড়া অপসারণ করা হচ্ছে না। তাছাড়া সোঁতি জালের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনছে না প্রশাসন। 

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, সোঁতি জাল দিয়ে মাছ শিকার মৎস্য আইনে নিষিদ্ধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমান বা দুই বছরের জেল। আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সোঁতি জালের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে কোন নমনীয়তা নেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান রশীদ হোসাইনি জানাচ্ছেন, সোঁতির কারণে আবাদি জমি থেকে পানি ধীরে নামছে। এতে সরিষা ও রসুনের আবাদ পিছিয়ে যাবে। এর ফলে পিছাবে বোরো ধানের আবাদ। কমে যাবে ফলন, ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক। উপজেলার সমন্বয় সভায় সোঁতি জাল অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম কুমার সরকার বলছেন, এসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে। সোঁতি জালের খবর পেলেই অভিযান চালানো হবে। 

কেএসটি

আরও পড়ুন