• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ০৬:০১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ০৬:০১ পিএম

বিনা দোষে ২৭ দিন কারাভোগের পর জামিন পেলেন নয়ন

বিনা দোষে ২৭ দিন কারাভোগের পর জামিন পেলেন নয়ন
বাবুল হোসেন নয়ন  -  ছবি : জাগরণ

টাঙ্গাইলের সখীপুরে একটি ধর্ষণ মামলায় নামে মিল থাকায় বিনা দোষে ২৭ দিন কারাভোগ করার পর অবশেষে কলেজছাত্র বাবুল হোসেন নয়ন জামিন পেয়েছেন।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সখীপুর-নাগরপুর আমলি আদালতের বিচারক আকরামুল ইসলাম তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। বাবুল হোসেন নয়ন সখীপুর উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে।

টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তানবীর আহাম্মেদ বলেন, ‘আইনজীবীদের জামিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। জামিননামা কারাগারে পৌঁছানোর পর নয়ন মুক্তি পাবেন।’

টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেলার আবুল বাশার বলেন, ‘জামিননামা পাওয়ার পরই নয়ন কারাগার থেকে বের হবেন। বিকেলের মধ্যেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে তিনি বের হতে পারবেন।’

বাবুল হোসেন নয়ন সখীপুরের সরকারি মুজিব কলেজ থেকে চলমান ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। ফলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়া হয়নি নয়নের।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর সখীপুর উপজেলার পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী বাসাইলের চাপড়াবিল এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়। চার দিন পর টাঙ্গাইল ডিসি লেকের পাশ থেকে পরিবারের লোকজন ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরিবারেরে চাপে মেয়েটি নয়ন নামের এক ছেলের সঙ্গে কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়েছিল বলে জানায়। পরে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মেয়েটির মা বাদী হয়ে প্রতিবেশী শাহজাহান আলীর ছেলে বাবুল হোসেন নয়নকে আসামি করে থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ নয়নকে গ্রেফতার করে মেয়েটির মুখোমুখি করলে মেয়েটি গ্রেফতার হওয়া বাবুল হোসেন নয়নকেই ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করে। এ সময় নয়ন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ওই ছাত্রীকে চেনেন না এবং কক্সবাজারে যাননি বলে জোর দাবি করতে থাকেন। মেয়েটির অনড় অবস্থানের কারণে নয়নকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত পুলিশকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সখীপুর থানার এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জেলগেটে জিজ্ঞাবাদের সময়ও নয়ন বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করছিল। মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় অধিকতর গুরুত্বসহকারে তদন্ত শুরু করি। মেয়েটির কাছ থেকে পাওয়া কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলের ভিজিটিং কার্ডের সূত্র ধরে চলে তদন্ত। পরে ওই হোটেলে দেয়া মোবাইল নম্বর ও সিসি টিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৭ অক্টোবর ঘটনার আসল হোতা নয়ন মিয়াকে বাসাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে বাসাইল উপজেলার বাঘিল গ্রামের ফারুক ওরফে নূহু মিয়ার ছেলে। পরে গ্রেফতার হওয়া নয়ন মিয়া ওই ছাত্রীকে কক্সবাজারের একটি হোটেলে রেখে ধর্ষণ করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বের হয়ে আসে আসল ঘটনা।

এদিকে নামের ভুলে বিনা দোষে গ্রেফতার ও কারাভোগের কারণে নয়নের এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বাবুল হোসেন নয়নের বাবা শাহজাহান আলী বলেন, ‘আমার নির্দোষ ছেলেটা জেল খেটেছে। মিথ্যা মামলার কারণে এবার পরীক্ষাটাও দিতে পারল না। যাদের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তাদের বিচার চাই।’

এনআই

আরও পড়ুন