• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০১৯, ১১:২৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৪, ২০১৯, ০৮:৩০ পিএম

নুসরাত হত্যায় অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

নুসরাত হত্যায় অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড
নুসরাত জাহান হত্যায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তর আসামিরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আবদুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহসভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

এদিকে, এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও নুসরাতের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহানকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ৫দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

কারাগার থেকে আদালতে দেয়া হচ্ছে অধ্যক্ষ সিরাজকে- ছবি: জাগরণ 

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেয়ায় জন্য গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে নুসরাতকে কৌশলে ডেকে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে যায় সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা। সেখানে তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

নুসরাত হত্যা মামলায় পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ২১ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। পরে ২৯ মে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই। সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় নূর হোসেন, আলা উদ্দিন, কেফায়েত উল্যাহ জনি, সাইদুল ও আরিফুল ইসলামের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়।

অভিযোগপত্রে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিলের নাম উল্লেখ করে সর্বোচ্চ শান্তি দাবি করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম।

এর আগে রায় ঘোষণার জন্য আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে পুলিশি নিরাপত্তায় এ মামলার ১৬ আসামিকে কারাগার থেকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এ সময় নুসরাত হত্যা মামলার রায়কে ঘিরে আদালত চত্বরসহ ফেনী সদর ও সোনাগাজীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকিও বসানো হয়। রায় ঘোষণার পর যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের টহল জোরদার করা হয়।

বিএস/এএইচএস/টিএফ

আরও পড়ুন