• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০১৯, ০২:৪০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৩১, ২০১৯, ০২:৪১ পিএম

জুড়ীর টিলায় অমূল্য রত্ন (১ম)

কমলা আমদানির কারণে মূল্য পাচ্ছেন না দেশি চাষিরা

কমলা আমদানির কারণে মূল্য পাচ্ছেন না দেশি চাষিরা

চারদিকে সবুজের অরণ্য আর উঁচু নিচু পাহাড়। পাহাড়ের মধ্যে সারি সারি কমলা গাছ। গাছে গাছে কমলায় টই টম্ভুর। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার টিলায় টিলায় এই অমূল্য রত্ন কমলা। কমলার মৌসুম সবে মাত্র শুরু হয়েছে। 
মৌসুমের শুরুতেই কমলা চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ কমলার ফলন ভালো হয়েছে। তবে কমলা চাষিরা বলছেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্প’ চালু ছিল। প্রকল্পের সময় প্রশিক্ষণ ও তাৎক্ষণিক পরামর্শে কমলা চাষিরা উপকৃত হতেন। বর্তমানে এই প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে। সেই প্রকল্প আবার চালুর দাবি তাদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় কমলা বাগানের সংখ্যা ১৪৬টি। জেলাজুড়ে ১৭৮ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে। তার মধ্যে জুড়ী উপজেলায় ৯২ হেক্টর, বড়লেখায় ৬০ হেক্টর, কুলাউড়ায় ২০ হেক্টর জমিতে এই কমলা চাষ। এর মধ্যে কমলা চাষি রয়েছেন ১৪৬ জন। গত বছর প্রতি হেক্টরে কমলার উৎপাদন ছিল চার থেকে সাড়ে চার টন। এ বছর প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৬ মেট্টিক টন। 

চাষিদের অভিযোগ- মৌসুমের শুরুতে ভারতীয় কমলা বাজারে চলে আসায় তাদের লোকসান পোহাতে হয়। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তারা অবহিত করেছেন। 

জুড়ী উপজেলার লালছড়া চা বাগানের জয়নুল ইসলাম জানান, তার বাগানে প্রায় ১২০০ কমলা গাছ রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর তার বাগানে কমলার ফলন ভালো হয়েছে। এবছর প্রায় ২ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রির আশা করছেন। তবে ভারতীয় কমলা আমদানির কারণে সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না তারা। ভারতীয় কমলা আমদানি বন্ধ করার দাবিও জানান তিনি।

জুড়ি উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের রূপাছড়া, লালছড়া, হায়াছড়া, শুকনাছড়াসহ পাহাড়ি এলাকার কমলা চাষিরা জানান, গাছে গাছে সবুজ সোনালি ফল ঝুলে আছে। গাছভর্তি ফলন না হলেও কোনও গাছই খালি নেই, কমবেশি সব গাছেই রয়েছে ফল। বানরের উৎপাতে কমলা ঝরছে। জুড়ীতে দুই ধরনের কমলার চাষ বেশি হয়। এর মধ্যে নাগপুরী ও খাসি। তবে খাসি কমলার চাষ এখানে বেশি।

কমলা চাষিরা জানান, তারা স্থানীয়ভাবে পাইকারের কাছে ১০০ কমলা ৫০০ টাকা থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, মৌসুমের শুরুতে ভারতীয় কমলা বাজারে চলে আসায় অনেক চাষি আগাম কমলা বাজারে তুলেন। যার জন্য কমলা টক হয়। বিষয়টি মাথায় রেখে কিভাবে আগাম কমলা চাষ করা যায় সেটি দেখা হচ্ছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, আগে চাষিরা বাগান বিক্রি করে দিত পাইকারের কাছে। যার ফলে চাষি ও পাইকার সঠিকভাবে বাগানের পরিচর্চা করত না। আমরা চাষিদের বিষয়টি বুঝিয়েছি যে এভাবে বাগান বিক্রি করে দিলে তাদের লোকসান হবে। আমরা তাদেরকে ল্যাপটপ নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। যাতে কমলার ফলন বাড়ানো যায়। কমলার উৎপাদন নিশ্চিত করতে বর্ষার পর পর গাছের ডাল ছাঁটাই এবং খরার সময় সেচ দেয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যে প্রকল্পটি চালু ছিল সেটি শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণে ৫ (২০১৯-২০২৪ ) বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প চালু হবে।

কেএসটি
 

আরও পড়ুন