• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০১৯, ০৬:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৩১, ২০১৯, ০৬:২১ পিএম

শিক্ষকদের গাফিলতি, জেএসসি পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না দুই শিক্ষার্থীর

শিক্ষকদের গাফিলতি, জেএসসি পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না দুই শিক্ষার্থীর
শিক্ষকদের গাফিলতিতে জেএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না রাকিব ও রাব্বি  -  ছবি : জাগরণ

শিক্ষকদের গাফিলতিতে দুই জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষাজীবনের শুরুতেই ঝরে পড়ছে একটি বছর। শিক্ষকেরা বলছেন, পরীক্ষার ফরম ফিলাপের টাকা জমা না দেয়ায় তাদের প্রবেশপত্র আসেনি।

ঘটনাটি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ফাজিল মাদ্রাসা ও টঙ্গিরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের। শিক্ষার্থীরা হলো রামচন্দ্রপুর ফাজিল মাদ্রাসার রাকিব হোসেন ও টঙ্গিরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের মো. রাব্বি।

শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন। অষ্টম শ্রেণিতে তার রোল নং ৩৩। তার গ্রামের বাড়ি ৭ নং বড়কুল ইউনিয়নের ঝাকনী গ্রামে। বাবার নাম দেলোয়ার হোসেন।

রাকিব হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমি ফরম ফিলাপের জন্য ১০০ টাকা বরকত উল্লাহ স্যারের কাছে দিয়েছি। এখন স্যার বলছে আমার নাকি ফরম ফিলাপ হয়নি। এখন আমাকে এক বছর অষ্টম শ্রেণিতে থাকতে হবে। লেখাপড়ার খরচা দিতে হবে না।’

সে আরো জানায়, ‘আমি মূল্যায়ন পরীক্ষা দিয়েছি। বিদায়ের চাঁদা দিয়েছি। যারা স্কুলে নিয়মিত আসেনি, তারা পরীক্ষা দেবে। অথচ আমি পরীক্ষা দিতে পারব না।’

জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা মাদ্রাসার শিক্ষক মোহম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আমার কাছে কোনো টাকা দেয়নি। সে ফরম ফিলাপ করেনি। তাই প্রবেশপত্র আসেনি।’ মূল্যায়ন পরীক্ষা ও বিদায়ের চাঁদা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাকিবের ফরম ফিলাপ হয়েছে কি না তা জানা ছিল না। আমারও খেয়াল ছিল না।’

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সফিকুর রহমান বলেন, রাকিব ওই সময় অসুস্থ ছিল। ওই সময় সে ফরম ফিলাপ করতে আসেনি। শিক্ষকের কাছে কোনো টাকাও দেয়নি। এই মাদ্রাসা থেকে ৩২ জন জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

অন্যদিকে টঙ্গীরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাব্বি। তার রোল নম্বর ১১৭। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে ২২৯ জন। কিন্তু পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না রাব্বির। মূল্যায়ন পরীক্ষা, বিদায়ের চাঁদা এবং এমনকি প্রবেশপত্রের জন্যও ৪০০ টাকা দিয়েছে। এখন শিক্ষকরা বলছেন তার প্রবেশপত্র আসেনি। সে ৮ নং হাটিলা টঙ্গীরপাড় ইউনিয়নের হাটিলা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

শিক্ষার্থী মো. রাব্বি বলে, ‘ফরম ফিলাপের সময় প্রধান শিক্ষকের সামনে আমি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাসেল মজুমদার কাকার কাছে ১ হাজার ৮০০ টাকা দিয়েছি। এখন শুনতেছি আমার ফরম ফিলাপ হয়নি।’

জানতে চাইলে রাসেল মজুমদার বলেন, ‘রাব্বি আমার ভাতিজা। আমি একসাথে ৫ জনের ফরম ফিলাপ করেছি। তাদের মধ্যে রাব্বির একজন। প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকাগুলো পৃথকভাবে দিয়েছি। শিক্ষকদের গাফিলতিতে রাব্বির প্রবেশপত্র আসেনি। এই দায় প্রধান শিক্ষকের।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘রাব্বির ফরম ফিলাপের টাকা জমা হয়নি। তাই প্রবেশপত্র আসেনি। এখন আমাদের কিছু করার নেই।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার (২ নভেম্বর) জেএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। যাদের প্রবেশপত্র আসেনি, এখন আর কিছুই করার নেই। দু-একদিন আগে হলে বোর্ডে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করা যেত। এখন আর কিছু করার নেই। তার পরও দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হবে।

এনআই

আরও পড়ুন