বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ফলে সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের লাখো মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার উপকূলবর্তী অঞ্চলের এসব মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম বলেন, শনিবার দুপুর পর্যন্ত আমার ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নেয়া হয়েছে। মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে চায় না। তবুও তাদের বুঝিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এলাকায় কোনো রাস্তাঘাট নেই। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইলেও রাস্তা না থাকায় সেটিও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শাহিনুর ইসলাম জানান, শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন দুটি অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, কৈখালী ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এসব এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। তারা বাড়িতেই থাকতে চায়। কেউ কেউ তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাচ্ছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম কামরুজ্জামান বলেন, আমি সকাল থেকেই উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের এলাকায় রয়েছি। এখানকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় যেতে বলা হচ্ছে, বোঝানো হচ্ছে। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে।
অন্যদিকে আশাশুনি উপজেলার উপকূলীয় শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি ভাতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, বিকাল পর্যন্ত উপকূলের লাখের অধিক মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী চেয়েছি। অলরেডি সেনাবাহিনী মাঠে নেমে গেছে। প্রশাসনের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে কাজ করছেন। উপকূলীয় এলাকার মানুষকে বুঝিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে।
এনআই