• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০১৯, ১২:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১২, ২০১৯, ১২:৪৭ পিএম

১৫ বছর তালাবদ্ধ মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেরি

১৫ বছর তালাবদ্ধ মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেরি

জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেরি দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। লাইব্রেরিটি চালু করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। 

দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাজার পাড়ায় অবস্থিত লাইব্রেরিটি এক সময় সকাল বিকাল পাঠকদের আনাগোনা ও বই পড়ায় মুখরিত থাকতো।

১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগার ভবনের দ্বিতল ভবন সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষের দিকে থাকা অবস্থা থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। বই-পুস্তক ও আসবাবপত্র থাকা সত্ত্বেও চালু করার কোনো উদ্যোগ নেই। অবলোয় নষ্ট হচ্ছে বই-পুস্তকসহ সব আসবাবপত্র।

জানা গেছে, ১৯৫৫ সালে জ্ঞানচর্চার কথা চিন্তা করে এলাকার সামসুল আলম মাস্টার, আহসান আলি মাস্টার, অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য আজাহার উদ্দীন, ইউসুফ আলি খাঁন মাস্টার, দীন মোহাম্মদসহ কয়েকজন মিলে দামুড়হুদায় লাইব্রেরি করার পরিকল্পনা করেন। এরপর নিজেদের উদ্যোগে কিছু বই আসবাবপত্র সংগ্রহ করে সামসুল আলম মাস্টারের একটি পুরাতন ভবনে লাইব্রেরির কার্যক্রম শুরু করা হয়।

লাইব্রেরির পদাধিকার বলে ওই সময়কার থানা সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) সভাপতি, শফি উদ্দীন খাঁন, ইউছুফ আলি খান পর্যায়ক্রমে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় খুব ভালোভাবেই চলে আসছিল লাইব্রেরির কার্যক্রম। ধীরে ধীরে পাঠক সংখা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

১৯৮৭ সালে পুরাতন ভবনটি ফাটল ধরলে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তিতে একই পাড়ার সামসুল আলম মাস্টার পুরাতন ভবনের স্থানে ২ শতাংশ জমি লাইব্রেরির নামে দান করেন। ওই জমিতে সরকারি অনুদানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় ও জমিদাতার বাবার নামে মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেনি নামকরণ করা হয়। তখন সরকারি অনুদানে বইপত্র ও আসবাবপত্র ক্রয় করার পর পাঠক কুলের বইপড়া ও আনা গোনায় মুখরিত থাকতো লাইব্রেরি।

১৯৯৩ সালে শফিকুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক ও মনজুর রহমানকে লাইব্রেরিয়ানের দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঠকের সংখা ব্যাপক হারে বেড়ে খুবই রমরমা অবস্থা চলছিল। পাঠক সংকুলান না হওয়ায় ওই বছরই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি অনুদানে শুরু করে দ্বিতল ভবনের কার্যক্রম। তবে ছাদ ঢালায়ের আগমুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায় দ্বিতল ভবনের কার্যক্রম। এরই মাঝে সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম ২০০৪ সালে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় চলে যান। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন একই এলাকার সহিদুল ইসলাম। তখন থেকে পাঠক সংখ্যা কমতে শুরু করে। এরপর এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে বই-পুস্তকসহ আসবাবপত্র।

কাজী সাইদুল ইসলাম বাদশা, মকবুল হোসেনসহ অনেকেই বলেন, ওই সময় উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা ও অনেক চাকরিজীবীরা নামী-দামি লেখকদের বই পড়ে জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে সময় কাটাতেন। লাইব্রেরিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী। তারা লাইব্রেরীটি চালু করা জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. মুনিম লিংকন জানান, লাইব্রেরিটি পরিদর্শনে যাবো ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে বসে আলোচনা করে কিভাবে পুনরায় এটি চালু করা যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম জানান, গ্রামের ভিতরে হওয়ায় এখন আর কেউ পুরাতন বাজারের দিকে আসতে চায় না। নতুন প্রজন্মের ভালো লেখকদের বই-পুস্তক সংগ্রহ করে আবারো নতুন উদ্দ্যোগে নিলে হয়তো আবারো লাইব্রেরিটি চালু করা সম্ভব।

কেএসটি

আরও পড়ুন