• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০১৯, ০২:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৯, ২০১৯, ০২:৪২ পিএম

আত্রাইয়ে চিনিআতপ ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

আত্রাইয়ে চিনিআতপ ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

নওগাঁর আত্রাইয়ে দিগন্ত জুড়ে চিনিআতপ ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চিনিআতপ ধানের চাষ করা হয়েছে। মাঠে মাঠে গড়ে উঠেছে সবুজের সমরোহ। মৌসুমের শুরুর দিকে মাঠে বন্যার পানি বেশি থাকায় আমনচাষ নিয়ে কৃষকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লেও পরে মাঠ থেকে পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকরা পুরোদমে আমন ধানের চাষ শুরু করে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে আত্রাইয়ে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে বিআর-৩৪ (চিনিআতপ) ধানের চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, এ বছর আমন মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৫ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে এর চেয়ে অনেক বেশি। ৫ হাজার ৭ শত ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এছাড়াও বুনা আমনের চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে অধিকাংশই চিনিআতপ ধান। বন্যা দুর্গত এলাকা হিসেবে এ অঞ্চলের কৃষকরা আমনচাষকে লাকী কুপন হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। অনেক সময় বন্যার পানিতে ডুবে কৃষকদের সব চেষ্টাকে ম্লান করে দেয়। তবে এবারে বন্যা নয় বরং রোপা আমনের উপযোগী পানি মাঠে থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকদের ধারণা।

উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া ও মনিয়ারী ইউনিয়নগুলোর মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে চিনিআতপ ধান। ইতোমধ্যেই অনেক জমিতে ধানের শীষ দোলা খাচ্ছে। চিনি আতপের সু-ঘ্র্যাণে এলাকা মুখরিত হয়ে উঠছে। কৃষকরা শুধু ধান পাকার অপেক্ষায়।

শাহাগোলা গ্রামের আজাদ আলী সরদার বলেন, এবারে তাদের মাঠে রোপা আমন হিসেবে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে চিনিআতপ ধান চাষ করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে পাইজাম, চিনিআতপসহ বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষ করা হতো। কিন্তু এবারে ওই ধানগুলোর দাম মন্দা থাকায় সকল কৃষক চিনিআতপ ধানের চাষে ঝুঁকেছেন। মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ শোভা পাচ্ছে। এ দেখে আমাদের মন আনন্দে উদ্বেলিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার চিনিআতপ ধানের বাম্পার ফলন হবে। 

উপজেলার চৌথল গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন, গত বোরো মৌসুমে ধান চাষ করে আমাদের অনেক লোকসান গুণতে হয়েছে। ওই লোকসান পুষিয়ে নিতে এবারে আমার সব জমিতে চিনিআতপ ধানের চাষ করেছি। ধানও ভাল হয়েছে। ভালমতো ধান ঘরে তুলতে পারলে লাভবান হওয়া যাবে।

আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম কাউছার হোসেন বলেন, চাষকৃত ধানের মধ্যে উন্নত ফলনশীল উফশী ও স্থানীয় জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিনি আতপ এবং বিন্না ফুল উল্লেখযোগ্য। তবে যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত না হানে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে চলতি মৌসুমেও কৃষকরা আমনধানের বাম্পার ফলন পাবেন। এছাড়াও ধানের সকল রোগ সম্পর্কে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা, আলোচনা সভা ও আলোক ফাঁদ প্রদর্শন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আমনধান কৃষকদের ঘরে না ওঠা পর্যন্ত এই সব কার্যক্রম চলবে। প্রতি বছরের চেয়ে এবারও আমনধানের ফলন অনেক বেশি হবে বলে আমি আশাবাদি। এ ছাড়াও মাঝড়াপোকা এবং অন্যান্য আবাদ বিনষ্টকারী পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদেরকে পার্চিংসহ অন্যান্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছেন। ফলে এবারে আত্রাই এলাকার কোথাও মাঝড়াপোকার আক্রমন নেই।

একেএস

আরও পড়ুন