• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০১৯, ০১:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২১, ২০১৯, ০১:২৪ পিএম

বুলবুলের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬শ ইটভাটা মালিক

বুলবুলের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬শ ইটভাটা মালিক

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পথে বসিয়ে দিয়েছে বরিশাল বিভাগের ৬ শতাধিক ইট ভাটা মালিককে। পোড়ানোর অপেক্ষায় সাজিয়ে রাখা কাঁচা ইট বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে ভিজে মাটির স্তুপে পরিণত হয়। এতে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দুইশ কোটি টাকা ছাড়াবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, ‘বৈধ এবং অবৈধ মিলিয়ে বরিশালের ৬ জেলায় ৬শ’র ওপর ইটভাটা রয়েছে। সকল ইটভাটায় চলছিল ইট তৈরির কাজ। চলতি মাসের ২০ তারিখের পরে ইট পোড়ানো শুরু হওয়ার কথা ছিল। এজন্য আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কাঁচা ইট তৈরি করে তা সারবিদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয় ইটভাটা এলাকায়।

কিছু কিছু কাঁচা ইট পোড়ানোর জন্য প্রস্তুতও করা হয়। কিন্তু সব প্রস্তুতিই শেষ করে দিয়েছে মৌসুমের শুরুতে হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হওয়া বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে ভিজে কাঁচা ইট গলে গিয়ে মাটির স্তুপে পরিণত হয়েছে।

বরিশাল সদর উপজেলা এবং বাবুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইটভাটায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গত ১০ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ভিজে স্তুপে পরিণত হওয়া মাটি সরানোর কাজ করছে শ্রমিকরা। ক্ষতি পোষাতে দিন-রাত সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

কিছু কিছু ইটভাটায় মাটির স্তুপ অপসারণ করে পুনরায় কাঁচা ইট তৈরি করে তা পোড়ানোর জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই তা পোড়ানো হবে। অবশ্য জিকজাক ইটভাটাগুলোতে এরই মধ্যে ইট পোড়ানো এমনকি বেচা বিক্রিও শুরু হয়েছে। তবে তার পরেও হাসি নেই ইব ব্যবসায়ীদের মুখে।

বরিশাল ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান খসরু জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আমার ‘স্টার ব্রিক্স’ নামের ইটভাটার তিন লক্ষাধিক টাকার কাঁচা ইট বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়েছে। এতে কম করে হলেও ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরবর্তী পুনরায় ইট তৈরি এবং শ্রমিক মজুরিসহ আর কয়েক লাখ টাকা গচ্ছা দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ক্ষতি শুধুমাত্র আমার একার ইটভাটায় হয়নি। বরিশাল বিভাগে যে ৬শ ইট ভাটা রয়েছে সবগুলোতেই কম বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি ভাটায় গড়ে ২৫ লাখ কাটা করে হিসাব করা হলেও তাতে দেড়শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষতির পরিমাণ দুইশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করেন মালিক সমিতির এই নেতা।

আসাদুজ্জামান খসরু বলেন, আমাদের মতো ব্রিক ফিল্ড মালিকরা লাভ করতে না পারলেও কিছুটা হলেও ক্ষতি পূরণ করতে পারবে। কিন্তু বেশিরভাগ ইটভাটা মালিক মৌসুমের আগে লাখ লাখ টাকা দাদন নিয়েছে। আবার অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ইট তৈরি করে। পরে তা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করে।

এসব মালিকদের ক্ষেত্রে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা দুঃসাধ্য। তাদের একেবারেই পথে বসতে হয়েছে। তাই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ইটের মূল্য বৃদ্ধি করা জরুরি। নয়তো বন্যায় বৃহত্তর যে ক্ষতি হয়েছে তা পোষানো কোনভাবেই সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ইটভাটা মালিকদের ক্ষতিপূরণে সরকারি সহায়তার দাবি করেন ওই ব্যবসায়ী নেতা।

কেএসটি

আরও পড়ুন