ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল মেধাতালিকায় অবস্থান ১২তম! এমনই এক এলাহি কাণ্ডের অভিযোগ এসেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে।
গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষ (কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষায় এক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় গত ১২ নভেম্বর।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মানবিক বিভাগ থেকে ‘বি’ ইউনিটে ভর্তিচ্ছু ওই পরীক্ষার্থীর নাম মো. সাজ্জাতুল ইসলাম। বাবার নাম মো. রেজাউল করিম। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর ২০৬০৫০। গত ৮ নভেম্বর সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষায় একজন আবেদনকারী ছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সিট প্ল্যান অনুযায়ী তার সিট পড়েছিল কোটবাড়ির টিচার্স ট্রেনিং কলেজে।
তবে সেদিন তিনি পরীক্ষা দেননি। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষার হলে যে উপস্থিতির তালিকা সরবরাহ করা হয়, সেখানে শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরের ঘরে তার স্বাক্ষর নেই। তাকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। অথচ পরীক্ষার পর ১২ নভেম্বর ওই ইউনিটের ফলাফলে দেখা যায়, ২০৬০৫০ রোল নম্বরধারী সাজ্জাতুল ইসলাম ‘বি’ ইউনিটের (মানবিক) মেধাতালিকায় ১২তম স্থান অধিকার করেছেন।
ভর্তি পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর নাম মেধাতালিকায় চলে আসার ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এ ব্যাপারে ফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হয়ে তার অফিসে গিয়ে দেখা করতে বলেন।
একই সুরে কথা বলেন ওই ইউনিটের সদস্যসচিব ড. মো. শামিমুল ইসলামও। তিনি জানান, ‘মেধাতালিকায় নাম এলেও এই শিক্ষার্থী তো ভাইভা দিতে আসেননি।’ তবে ভাইভা দিতে না এলেও পরীক্ষায় অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর রোল কীভাবে মেধাতালিকায় চলে এল, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা ২০১৯-২০ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের জানান, ‘বরাবরের মতো ভর্তি পরীক্ষায় আমরা সর্বাধিক স্বচ্ছতা রাখার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়টি ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে। কারণ যেহেতু সে পরীক্ষা দেয়নি, সেহেতু তার ওএমআর শিট ছাড়া ফলাফল আসার কথা নয়। তবে ফলাফল প্রস্তুতের ব্যাপারটি ইউনিটভিত্তিক দায়িত্বশীলদের কাজ। তাদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলব।’
ফলাফলে এ রকম আরও অসংগতি আছে কি না জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার জানান, ‘সেটা আমি বলতে পারব না। কারণ ফলাফল প্রস্তুতের সময় আমি বা উপাচার্য ছিলাম না। ফলাফল ইউনিট প্রধানরাই করেছেন। তবে এ রকম ভুল থাকলে তা বেরিয়ে আসবে।’
এনআই