• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০১৯, ০১:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২, ২০১৯, ০১:৪৯ পিএম

কাজে আসছে না লক্ষ্মীপুরের অধিকাংশ যাত্রী ছাউনি

কাজে আসছে না লক্ষ্মীপুরের অধিকাংশ যাত্রী ছাউনি

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরে কবির বাড়ির দরজায় সিএনজি স্টেশন ঘেঁষেই নির্মাণ করা হয়েছে জেলা পরিষদের অর্থায়নে যাত্রী ছাউনি। শহরের বাস ও সিএনজিগুলো ঝুমুর স্ট্যান্ডে সাধারণত থামে। ফলে এখানে এসে যাত্রীদের অপেক্ষার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া ছাউনির সামনেই রয়েছে গ্যাসের জন্য অপেক্ষমাণ সিএনজির লাইন। এদিকে রায়পুরের বাসা বাড়ি বাজার ও পাটোয়ারী রাস্তার মাথার যাত্রী ছাউনিও যাত্রীদের কোন কাজে আসছে না।

জেলা পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, জেলা পরিষদের আওতাধীন মোট ২৬টি যাত্রী ছাউনি রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬টি, রায়পুর উপজেলায় ৩টি, রামগঞ্জ উপজেলায় ৭টি, কমলনগর উপজেলায় ৪টি ও রামগতি উপজেলায় ৬টি যাত্রী ছাউনি  রয়েছে।

জানা যায়, জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর, রায়পুর উপজেলার বর্ডার বাজারসহ একাধিক নির্মিত যাত্রী ছাউনিগুলো দীর্ঘদিন থেকে অযত্ন আর অবহেলায় স্থানীয় দখলদারদের দখলে রয়েছে। বেশিরভাগ যাত্রী ছাউনিগুলো এভাবে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের কারণে যাত্রীদের কোনো কাজে আসছে না জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত তিন কক্ষের এসব যাত্রী ছাউনির। যাত্রী ছাউনিতে স্টেশনারী ও পানীয় দোকান দেয়ার জন্য ১২০ বর্গফুটের দোকান বরাদ্দ হলেও কোন নিয়মই মানছেন না দোকান ইজারাদাররা। এছাড়া জেলা পরিষদে দোকান ভাড়ার টাকা পরিশোধে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।

সরেজমিনে একাধিক যাত্রী ছাউনি ঘুরে দেখা যায়, জেলা পরিষদের উদ্যোগে নির্মিত অধিকাংশ যাত্রী ছাউনিতে যাত্রীদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শোচাগারটি অধিকাংশ সময় থাকে তালাবদ্ধ। পরিচর্যার অভাবে দেয়ালে জমেছে শ্যাওলা, বসার স্থান খসে পড়েছে। ছাউনিতে জলখাবারের দোকান করার কথা থাকলেও অধিকাংশ দোকানগুলো বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। যেগুলো খোলা তাকে সেগুলোয় বসেছে টিকিট কাউন্টারসহ নানা বাহারি দোকান। সিএনজি গ্যাস নিতে লাইন দিয়ে যাত্রী ছাউনির কোন কোনটির প্রবেশপথ বন্ধ করে রাখে। আবার যাত্রী ছাউনির সামনে ফেরি করে ডাব বিক্রেতাদের দখলে থাকে প্রবেশপথ। ফলে জেলায় দু-তিনটি ছাড়া যাত্রীদের কল্যাণে নির্মিত প্রায় অধিকাংশ যাত্রী ছাউনিই যাত্রীদের কোনো কাজে আসছে না। 

জেলা পরিষদের ঠিকাদার শেখ ফরিদ জানান, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এসব যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করেছে জেলা পরিষদ। যেখানে বাসস্ট্যান্ড রয়েছে, সেখানে না করে যত্রতত্র পছন্দের লোকজনকে দিয়ে এসব ছাউনি নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলোর বরাদ্দ ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায়ও অনিয়ম রয়েছে।

পরিবহন চালকরা জানায়, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ যাত্রীদের কল্যাণের জন্য। বৃষ্টি বা অতিরিক্ত গরম থেকে রক্ষা পেতেই মূলত যাত্রী ছাউনিগুলো নির্মাণ করা। কিন্তু দেখা গেছে, জেলা পরিষদ যেসব যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করেছে, সেগুলো যাত্রীদের কোনো কাজে আসছে না। কারণ একটি যাত্রী ছাউনিও পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ হয়নি। 

অপরিকল্পিত স্থানে যাত্রী ছাউনি নির্মাণের কথা স্বীকার করে জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আইয়ুব আলী জানান, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে যাত্রী ছাউনিগুলো নির্মাণ করা হলেও স্থান নির্বাচন সঠিক হয়নি বলে তিনি মনে করেন। টেন্ডারের মাধ্যমে দোকান ঘর বরাদ্দ পেলেও দোকানিরা প্রভাব বিস্তার করে ভাড়া দিতে চায় না। কয়েকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে যাত্রী ছাউনি নির্মাণে স্থান নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে বলেও তিনি জানান।

কেএসটি

আরও পড়ুন