• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:৩৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:৩৯ এএম

৩ ডিসেম্বর বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন কাজিপুরের মুক্তি বাহিনী

৩ ডিসেম্বর বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন কাজিপুরের মুক্তি বাহিনী

আজ ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনী কাজিপুর ছাড়তে বাধ্য হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে কাজিপুরে কয়েকটি স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে বাংলার সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে তাদেরকে প্রতিহত করে। 

১৭ নভেম্বর ’৭১ (মঙ্গলবার) বরইতলার যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। দূর্গম বরইতলা গ্রামে মুক্তিবাহিনীরা আশ্রয় নেন। এই খবর রাজাকারদের মাধ্যমে হানাদার বাহিনীদের কাছে পৌঁছালে তারা গ্রামকে ঘেরাও করে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী শিশুদের উপর অত্যাচার শুরু করে। শুরু করে হত্যাকাণ্ড।

মুক্তি বাহিনীরা স্থানীয় কমান্ডার প্রয়াত লুৎফর রহমান (দুদু) ও আব্দুস সাত্তারের যৌথ নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পাকবাহিনীর সাথে শুরু হয় যুদ্ধ। এ যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর কয়েকজন আহত হলে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু করে। গ্রামের নিরীহ মানুষ, নারী, বৃদ্ধ, শিশুদের উপর অসহনীয় অত্যাচার শুরু করে। পুড়িয়ে দেয় গ্রামের সকল ঘর বাড়ি, চালায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ সাধারণ মানুষ এমনকি মসজিদে ইতেকাফরত ৩০ জন মুসল্লিদেরকে পিঠ বেঁধে গ্রামের উত্তর পার্শ্বে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।

প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুসল্লিদের নৃশংস হত্যার খবর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পার্শ্ববর্তী উদগাড়ী কাচিহারা, মিরারপাড়া, মাথাইলচাপড়, আলমপুর, দুবলাই, গান্ধাইল ও বাঐখোলা গ্রাম থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এসে পাক হানাদারদের প্রবল বাধার সৃষ্টি করে। তাদের সাথে শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। এই যুদ্ধ চলে ঐদিন ভোর থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অবিরামভাবে। এ যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ৬ সেনা এবং বাবু নামে এক স্থানীয় রাজাকার নিহত হয়।

অপরদিকে, হানাদারদের গুলিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ, সুজাবত ও রবিলাল দাসসহ গ্রামবাসীদের ভিতর সিরাজুল, আব্দুর রহমান, আব্দুল হাকিম, গোলজার হোসেন, পন্ডিতা, মামুদ আলী ও তেছের আলীসহ ১০৪ জন শহীদ হন। তারপর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে ক্রমান্বয়ে হানাদার বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে ২ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা তিনদিক থেকে নরপশুদেরকে ঘিরে ফেলে। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে পাকিস্তানি নরপশু হানাদার বাহিনীরা ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভোরে কাজিপুর ছাড়তে বাধ্য হয়। শত্রু মুক্ত হয় কাজিপুর, বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন কাজিপুরের মুক্তি বাহিনীরা। এ উপলক্ষে কাজীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।       

কেএসটি
 

আরও পড়ুন