• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ০৮:৩০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ০৮:৩৪ এএম

সাতক্ষীরা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

সাতক্ষীরা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজ ৭ ডিসেম্বর। সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, শেরপুরের নালিতাবাড়ি ও জামালপুরের ইসলামাবাদ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা থ্রি নট থ্রি আর এসএলআরের ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করে। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা। শত্রুর বুলেটের আঘাত সহ্য করেও সাতক্ষীরার বীর যোদ্ধারা ১৬টি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেয়। 

১৯৭১ সালের ২মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তান বিরোধী মিছিলে রাজাকাররা গুলি করে হত্যা করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাককে। আর এখান থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া। মুক্তিযুদ্ধের খরচাদি বহনের জন্য সাতক্ষীরা ট্রেজারি হতে অস্ত্র আর ন্যাশনাল ব্যাংক হতে অলংকার, টাকা লুটের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুক্তির সংগ্রাম। ৮ম ও ৯ম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৭ মে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে আবদুল গফুর এমএনএ ও ইপিআর সুবেদার আইউবের নেতৃত্বে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়।

এ সময় পাক সেনাদের ২ শতাধিক সৈন্য নিহত হয়। ১৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে ৩ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২ জন আহত হন। এরপর থেমে থেমে চলতে থাকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা। এসব যুদ্ধের মধ্যে ভোমরার যুদ্ধ, টাউন শ্রীপুর যুদ্ধ, বৈকারী যুদ্ধ, খানজিয়া যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য।

এসব যুদ্ধে শহীদ হন ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। লাইটের আলোয় অসুবিধা হওয়ায় ৩০ নভেম্বর টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভীত সন্ত্রস্ত করে ফেলে পাক সেনাদের। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে পাক সেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বেনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাক বাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় জ্বলে ওঠে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা।

পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে সাতক্ষীরার যে সকল বীর সন্তান শহীদ হন তারা হলেন- শহীদ আব্দুর রাজ্জাক, কাজল, খোকন, নাজমুল, হাফিজউদ্দিন, নুর মোহাম্মদ, আবু বকর, ইমদাদুল হক, জাকারিয়া, শাহাদাত হোসেন, আব্দুর রহমান, আমিনউদ্দিন গাজী, আবুল কালাম আজাদ, সুশীল কুমার, লোকমান হোসেন, আব্দুল ওহাব, দাউদ আলী, সামছুদ্দোহা খান, মুনসুর আলী, রুহুল আমীন, জবেদ আলী, শেখ হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

সাতক্ষীরাবাসীর অভিযোগ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরার বধ্যভূমি গণকবরগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সংরক্ষণের অভাবে অযত্নে অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে বধ্যভূমি ও গণকবরের স্মৃতিচিহ্ন। তাই বধ্যভূমি ও গণকবরের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের।

জেডএইচ/একেএস

আরও পড়ুন