• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ০৯:২৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ০৯:২৯ এএম

গাইবান্ধা হানাদারমুক্ত দিবস আজ

গাইবান্ধা হানাদারমুক্ত দিবস আজ

আজ ৭ ডিসেম্বর। গাইবান্ধা হানাদারমুক্ত দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের আনন্দে ফেটে পড়েছিল গাইবান্ধার মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানায়, ১৯৭১ এর এই দিনে কোম্পানি কমান্ডার বীরপ্রতীক মাহবুব এলাহী রঞ্জুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের কালাসোনার চর থেকে বালাসী ঘাট হয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে। বর্তমান স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ ও তৎকালীন এসডিও মাঠ মুক্তিযোদ্ধা-জনতার মিলন মেলায় পরিণত হয়।

জানা যায়, এর আগে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বিকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মাদারগঞ্জ ও সাদুল্যাপুর হয়ে গাইবান্ধায় প্রবেশ করে। তারা টিএন্ডটির ওয়ারলেস দখল করে। পরবর্তীতে গাইবান্ধা স্টেডিয়ামে (বর্তমান শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়াম) ঘাঁটি করে। এই ঘাঁটি থেকেই তারা শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ, নারী নির্যাতন চালাতে থাকে। তাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে অসংখ্য মানুষ ধরে এনে হত্যা করার পর মাটিতে পুঁতে রাখে। বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটের পাশেও অসংখ্য লাশ পুঁতে রাখা হয়। তাই এই স্থানগুলো পরে বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
এর মধ্যে গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের দক্ষিণ অংশে এবং স্টেডিয়ামের বাইরে অসংখ্য মানুষ হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। প্রতি রাতেই স্টেডিয়ামের পাশে কফিল শাহের গোডাউন নামে পরিচিত প্রাচীর ঘেরা এই এলাকায় দালালদের সহায়তায় অসহায় মানুষদের ধরে এনে পাকিস্তানি সেনারা তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করত। বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের এখানে ধরে এনে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পার্শ্ববর্তী রেল লাইনের ধারেও গর্ত করে পুঁতে রাখা হতো লাশ।

গাইবান্ধা বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক জিএম চৌধুরী মিঠু সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘১৯৭১ এর নভেম্বরের শেষে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো গাইবান্ধাতেও মুক্তিযোদ্ধা এবং পাকিস্তানি সেনাদের লড়াই অব্যাহত থাকে। এক পর্যায়ে ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা খবর পায় পাকিস্তানি সেনারা গাইবান্ধা ছেড়ে চলে গেছে। ৬ ডিসেম্বর সকালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটি বিমান গাইবান্ধা রেলস্টেশনের পাশে বোমা ফেলে এবং বিকালে ট্যাংক নিয়ে মিত্রবাহিনী প্রবেশ করে শহরে। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব এলাহী রঞ্জুর নেতৃত্বে দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ৭ ডিসেম্বর সকালে বিজয়ীর বেশে হাজার হাজার শহরে প্রবেশ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গাইবান্ধার যুদ্ধগুলোর মধ্যে উল্লেযোগ্য যুদ্ধ হলো-বাদিয়াখালীর যুদ্ধ, হরিপুর অপারেশন, কোদালকাটির যুদ্ধ, রসুলপুর স্লুইস গেট আক্রমণ, নান্দিনার যুদ্ধ, কালাসোনার যুদ্ধ’।

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী আকবর জাগরণকে জানান, আজ ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা জেলা হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহরে র‌্যালি, দোয়া এবং আলোচনা সভা।

কেএসটি

আরও পড়ুন