• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ১০:২৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ১০:২৯ এএম

রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর অধিকার কমিটির অফিস বন্ধের নির্দেশ

রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর অধিকার কমিটির অফিস বন্ধের নির্দেশ

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কথিত ও বহু বির্তকিত অধিকার বিষয়ক ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের’ (এআরএসপিএইচ) প্রধান কার্যালয় বন্ধ করার নির্দেশে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এর অফিস তালাবদ্ধ করে রাখার কথা বলা হয়েছে তাতে। উক্ত রোহিঙ্গা সংগঠনের নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ গত আগস্ট থেকে অনেকটা নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন। 

আশ্রয় ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই সংগঠনের নেতাদের প্রতি এমন নির্দেশ দিয়েছেন কর্মকর্তারা। রোহিঙ্গাদের এক মুখপাত্র এমনটা দাবি করলেও তাদের অফিস বন্ধ করে দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশে শরণার্থীবিষয়ক কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার। তিনি বলেছেন, কর্তৃপক্ষ নির্মিত বহুমুখী কাজে ব্যবহারের উপযোগী কমিউনিটি সেন্টারে মিটিং করতে বলা হয়েছে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতাদের। আমরা কোনো অফিস বন্ধ করিনি। তাই বলে আমরা এমন কোনো কিছু অনুমোদন করব না, যা শরণার্থী শিবিরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এএফপি।

এতে আরো বলা হয়, কক্সবাজারে আটকে পড়া রোহিঙ্গাদের কথা বলার মূল কণ্ঠ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল এআরএসপিএইচ। দুই বছরেরও বেশি সময় আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে বাঁচতে, পালিয়ে ঢলের মতো বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদেরকে আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের বিভিন্ন বির্তকিত কর্মকাণ্ডে স্থানীয় অধিবাসী লোকজন ও প্রশাসনের মাঝে অধৈর্য ক্রমশ বাড়ছে। এমনই এক প্রেক্ষাপটের মধ্যে ওই নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এআরএসপিএইচের মুখপাত্র সায়েদ উল্লাহ শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ক্যাম্প ইনচার্জ আমাদের অফিস তালাবদ্ধ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সমবেত হওয়ার আগে অনুমতি নিতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ কারণে তাদের গ্রুপের সবরকম কর্মকাণ্ড স্থগিত রয়েছে। 

উল্লেখ্য, শিক্ষক থেকে হঠাৎ অধিকারকর্মী হয়ে ওঠা মহিবুল্লাহ নেতৃত্ব দিচ্ছেন এআরএসপিএইচের। শরণার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মিটিংগুলোতে তিনি হয়ে উঠেছেন মুখপাত্র। 

কিন্তু এ বছর আগস্ট মাসে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতার দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে স্মরণ করে রাখার জন্য প্রায় দুই লাখ শরণার্থীকে নিয়ে র‌্যালি ও সমাবেশের নেতৃত্ব দেন মহিবুল্লাহ। তারপর থেকেই তিনি কড়াকড়ির আওতায় পড়েন। ওই বিশাল র‌্যালি আশ্রয়দাতা বাংলাদেশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বাংলাদেশি স্থানীয় এসব সম্প্রদায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ দুটি পাহাড়ি এলাকায় রোহিঙ্গাদের তুলনায় সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন। ওই এলাকা দুটিতে গাদাগাদি করে তিন ডজন ক্যাম্পে বসবাস করছেন রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গাদের ওই বিশাল র‌্যালি ও সমাবেশ  এবং একই মাসে দ্বিতীয় দফার প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ার পর আশ্রিত রোহিঙ্গাদের গতিবিধির উপর কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। ওই অঞ্চলে উচ্চ মাত্রার ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়। বড় বড় বসতির চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে সেনাবাহিনী।

উল্লেখ্য, রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা, গণহত্যার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ২০১৭ সালের শেষের দিকে গঠন করা হয় এআরপিএসএইচ। এরইমধ্যে রোহিঙ্গাদের অন্যতম সংগঠন এআরএসপিএইচের নেতা মহিবুল্লাহর একছত্র বির্তকিত নেতৃত্ব নিয়ে একাধিক গ্রুপের জন্ম নেয়। গত এক বছর ধরে ঐ সংগঠনের অনেক শীর্ষ নেতা মিটিংয়ে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সংগঠনের দেশি-বিদেশি অনেক দাতাদের অনুদানের বিপুল পরিমাণ অর্থের ব্যয়ের অসচ্ছতা নিয়ে অনেক দিন ধরে সংগঠনের অভ্যন্তরে দ্বিধা বিভক্তি চলে আসছে  বলেও ঐ সূত্র জানিয়েছেন। 

কেএসটি
 

আরও পড়ুন