অবশেষে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ঝিনাইদহের শিশু রাইসার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অপারেশন সম্পন্ন করে হাসপাতালের চিকিৎসক মাসফিকুর রহমান স্বপনের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল টিম। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় এ অপারেশন সম্পন্ন হয়।
চিকিৎসার পুরো খরচ বহন করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু। এতে খুশি রাইসার পরিবারের সদস্যরা।
রাইসার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ শহরের ভেন্নাতলা গ্রামে মা নাসিমা খাতুনের সাথে বসবাস করে ৭ বছর বয়সী রাইসা। জন্মের পর থেকেই সে আক্রান্ত হয় থ্যালাসেমিয়া রোগে। বাঁচার জন্য প্রতি মাসে ১ ব্যাগ রক্ত দরকার হতো। জন্মের কয়েক বছর পর তাদের ছেড়ে চলে গেছে বাবা। অসহায় মা নাসিমা খাতুন স্বামীর সংসারে স্থান না পেয়ে থাকেন বাবার বাড়িতে।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর জন্মদিনে ভেন্নাতলায় বস্ত্র বিতরণ করতে যায় কথন সাংস্কৃতিক সংসদের কর্মীরা ও পৌর মেয়রের পত্নী আর্মিজা শিরিন আক্তার এ্যামী। সেখানে গিয়ে রাইসার খোঁজ পান তারা। বিষয়টি পৌর মেয়র জানার পর তার সকল চিকিৎসার খরচ বহন করার আশ্বাস প্রদান করেন। সেই থেকে রাইসার চিকিৎসা শুরু হয়। রাইসার বয়স কম হওয়ায় কোনো চিকিৎসক এ জটিল অপারেশন করার ঝুঁকি নিচ্ছিলেন না। পরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (শিশু সার্জারি) ডা. মাসফিকুর রহমান স্বপন রাইসাকে দেখে তার অপারেশনের দায়িত্ব নেন।
রাইসার মা নাসিমা খাতুন বলেন, মেয়ের এ অসুস্থতার কারণে স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সন্তানের চিকিৎসা করান পৌর মেয়র। তিনি মেয়ের জন্য ও পৌর মেয়রের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। ধন্যবাদ জানান কথন সাংস্কৃতিক সংসদের কর্মীদেরও।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পৌর মেয়র ও বাংলাদেশ অওয়ামী লীগ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ‘আমি নিজেও অসহায়, এতিম মানুষ। সব সময় চেষ্টা করি এ ধরনের অসহায় এতিম মানুষের পাশে থাকার। কথন সাংস্কৃতিক সংসদ (কসাস) যখন রাইসাকে আমার কাছে এনেছিল, তখন টাকার অভাবে রাইসার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে ছিল। অসহ্য যন্ত্রণায় প্রতিমুহূর্ত রাইসা দিন কাটাচ্ছিল।’ মেয়রের বিশ্বাস, মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় রাইসা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।
এনআই