• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২০, ০৮:৪১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৪, ২০২০, ০৮:৪১ এএম

মজুরি বৈষম্যের শিকার লালমনিরহাটের নারীরা

মজুরি বৈষম্যের শিকার লালমনিরহাটের নারীরা

গ্রামীণ জনপদে নারীরা এখন আর ঘরে বসে নেই। উপার্জন বাড়িয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে পুরুষের পাশাপাশি ক্ষেত খামারে শ্রম বিক্রি করছেন তারা। লালমনিরহাটে পুরুষদের মতো নারীদের ক্ষেত-খামারে কাজ করার তেমন একটা রেওয়াজ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে দুর্মূল্যের বাজারে শুধু পুরুষদের পরিশ্রমে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে পুরুষদের পাশাপশি নারীরাও ক্ষেত-খামার ও চাতালে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তবে নারীরা সমপরিমাণ পরিশ্রম করলেও পুরুষের তুলনায় মজুরি পাচ্ছেন কম। 

হাতীবান্ধা উপজেলার পারুলীয়া গ্রামে মরিচ ক্ষেতে পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন শান্তিবালা ও গীতা রানী রায়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাহে দলবেঁধে গ্রামের ক্ষেত-খামারে কাজ করি। এ অঞ্চলের নিয়ম অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গৃহস্থের (জমি মালিক) জমিতে নানা ধরনের কৃষি কাজ করতে হয়। গৃহস্থরা আমাদের মজুরি দেয় মাত্র ১৫০ টাকা। অথচ একই কাজে পুরুষ শ্রমিকদের দেয়া হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

পাটগ্রাম উপজেলায়ও সহস্রাধিক নারী শ্রমিক রয়েছেন। তারা পাথর ভাঙার মতো কঠিন কাজে নিয়োজিত। কিন্তু পুরুষের তুলনায় প্রতিনিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। কথা হয় পাথর শ্রমিক মফিজন বেওয়া ও মরিয়ম বেওয়ার সঙ্গে। তারা বলেন, পুরুষের পাশে বসে সমান কাজ করি। কিন্তু সমপরিমাণ কাজ করেও পুরুষের সমান মজুরি পাই না। নারীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নারী-পুরুষের মধ্যে মজুরি বৈষম্যের কথা স্বীকার করে সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামের ক্ষেতের মালিক মনছুর মিয়া বলেন, ‘নারীরা পুরুষের সমান কাজ করে সেটি সঠিক। কিন্তু পূর্ব থেকে বাজার যেভাবে চলে আসছে ঠিক সেভাবে দেওয়া হচ্ছে মজুরি। হঠাৎ করে তো বাড়ানো যাবে না’।

নারীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন জানিয়ে লালমনিরহাট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মজিদ জানান, নারীরা পুরুষের সমান কাজ করেও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও কাজের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে পারলে পুরুষের মতো তারাও কৃষিক্ষেত্রসহ সমাজের নানা কাজে ব্যাপক ভূমিকা রাখেতে পারবে। তাতে একদিকে বেকার সমস্যার সমাধান হবে অপরদিকে নারী পুরুষ মিলে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।

কেএসটি

আরও পড়ুন