• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০, ০২:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০, ০৪:২৫ পিএম

সুনামগঞ্জে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বৃদ্ধি

প্রকৃত সাংবাদিক হারাচ্ছে গ্রহণযোগ্যতা

প্রকৃত সাংবাদিক হারাচ্ছে গ্রহণযোগ্যতা
প্রতিকী ছবি

সারা দেশের মতো সুনামগঞ্জেও বাড়ছে অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংখ্যা। বেড়ে গেছে সাংবাদিক ও সম্পাদকগণ। ফলে, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকতার  স্থান। মানা হচ্ছে না অনলাইন নিউজ পোর্টাল তৈরীর নীতিমালা। ফলে, তথ্য সন্ত্রাস অত্যাধিক হারে বেড়ে গেছে। অথচ একটি পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন অনুমোদন নিতে বহু কাঠখর পড়াইতে হচ্ছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল তৈরী করতে মাত্র ২০০০ থেকে ৫০০০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই বনে যাচ্ছেন সম্পাদক প্রকাশক কিংবা সাংবাদিক। 

সাংবাদিকদের বলা হয় রাষ্ট্রের তৃতীয় স্তম্ভ এবং কেহ আয়না বলেও অবহিত করেন। সুনামগঞ্জেও এ ধরনের সম্পাদক প্রকাশক কিংবা সাংবাদিকের গড়েছে ছড়াছড়ি। এ সময় নাম সর্বস্ব নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ৮ম শ্রেনী থেকে একাদশ শ্রেণীতে পড়া শিক্ষার্থীরাও বনে যাচ্ছে সম্পাদক ও প্রকাশক। তাদের বেশীর ভাগই ১৫-১৮ বছরের বয়সের। টাকার বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রেসকার্ড। অনেকেই আবার নিজের স্বাক্ষরিত কার্ডে নিজেই সম্পাদক  প্রকাশক, স্টাফ রিপোর্টার কিংবা জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি’র কার্ড ব্যবহার করছেন। যার ফলে জেলার সংবাদিকতায় বাড়ছে কপি পেস্টের ব্যবহার। এসব অপসাংবাদিকতা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রু পদক্ষেপ নিতে হবে। 

সুত্র জানায়, কিছু দিন পূর্বে যারা ছিল ব্যবসায়ী, ড্রাইবার, কর্মহীন যুবক, ঠিকাদার কিংবা দালালের কাজে নিয়োজিত, তারাই আজ এসব অনলাইন নিউজ পোর্টালের বদৌলতে সাংবাদিকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা কিংবা উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই হুট করে বনে যাচ্ছেন জেলার বড় মাপের সাংবাদিক। তারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন সম্পাদক প্রকাশক কিংবা সাংবাদিক হিসেবে। যেকোন দফতরে গিয়েই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ব্লাক মেইলিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। এসব পত্রিকা বন্ধ করা খুবই জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব অনলাইন নিউজ পোর্টালের কারণে বহুগুনে বেড়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজীর ঘটনা। এদের কারণে প্রকৃত সাংবাদিকরা হারাচ্ছে তাদের গ্রহনযোগ্যতা। 

এসব পত্রিকার মালিকের মধ্যে অনেকেই আবার মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত রয়েছেন, তবুও তারা সম্পাদক।  নিজের পোর্টাল থেকে লাইভের মাধ্যমে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যবহার করে তাদের জনপ্রিয়তা হাসিল করে চলছেন। এতে করে জেলার মূলধারার সাংবাদিকতা হুমকীর মুখে পড়ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। 

খোজ নিয়ে জানা যায়, কোন কোন ব্যক্তির নামে ২-৫ টি নিউজ পোর্টাল রয়েছে। আর এসব পোর্টালে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপদেষ্টা হিসেবে নাম ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সাংবাদিকতা ব্যবসা।  দেখা যায়, হঠাৎ করে কোন ব্যাক্তি বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মনগড়া ও তথ্যহীন রিপোর্ট তৈরী করে অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করে তাদের ইমেজ নষ্ট করছে। আবার উপর থেকে চাপ আসলে সাথে সাথে তা ডিলেট করে দিচ্ছেন। আবার বড় বড় নেতাদের লাইভে এনে কামাচ্ছেন অর্থ। 

তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ গত কিছুদিন পূর্বে বলেছিলেন “সরকার কর্তৃক নিবন্ধন ব্যতিত কোন নিউজ পোর্টালের গ্রহনযোগ্যতা নাই এবং তারা কোন সাংবাদিক নয়। এদের কারণে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।” অথচ একটি পত্রিকার অনুমোদন নিতে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা বার বার যাচাই বাচাই করণের মাধ্যমে অনুমোদন দিয়ে থাকেন। আর এসব পত্রিকা কিংবা গণমাধ্যমের মালিকরা সরকারের কাছে দায়বদ্ধতা থাকেন। ফলে, ইচ্ছে করলেই যে কোন বিষয়ে সংবাদ প্রচার করতে পারেন না। 

এ বিষয়ে জেলার প্রিন্ট পত্রিকা সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা জানান, “যেভাবে অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংখ্যা বাড়ছে সেভাবে বাড়তে থাকলে আমরা প্রকৃত সম্পাদক ও সম্পাদকরা ছিটকে পড়তে হবে। বন্ধ করে দিতে হবে এসব পত্রিকা। এগুলোর নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।” 

এ ব্যাপারে তথ্য অদিফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরত কুমার সরকার বলেন, সরকার এসব অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এবং তথ্য অধিদফতর কিছু অনলাইন পোর্টালকে আবেদনের প্রেক্ষিতে নিবন্ধন প্রদান করছে। যাদের নিবন্ধন পাওয়ার বাকি রয়েছে আগামী মাসের মধ্যে তাদেরকে নিবন্ধন দেয়া সম্পন্ন হবে। 

তিনি আরও জানান, যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে আবেদনকৃত অনলাইন পোর্টালের মধ্যে যেসব অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোকে নিবন্ধন দেয়া হবে না তাদের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

জাগরণ/এমএইচ

আরও পড়ুন