• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০, ০৩:১৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০, ০৩:১৩ পিএম

ঠাকুরগাঁও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের হ য ব র ল অবস্থা

ঠাকুরগাঁও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের হ য ব র ল অবস্থা

ঠাকুরগাঁও জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা হ-য-ব-র-ল অবস্থায় চলছে। জেলা কার্যালয়সহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে সেবাদানকারীদের যাতায়াতের কোন নিয়ম মানা হচ্ছে না। এতে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মা ও শিশুসহ স্থানীয় জনগণ। 

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত খোলা রেখে রোগীদের সেবা দেয়ার কথা। কিন্তু, বাস্তবে দেখা মিলে তার ঠিক উল্টো চিত্র।

জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বিকেল ৩টার পরিবর্তে অফিস বন্ধ হয়ে যায় বেলা ১২টায়। আবার কোথাও ৯টায় অফিস না খুলে অফিস খোলা হয় ১০-১১টায়। পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের মাঠে থাকার কথা থাকলেও বেশীর ভাগ কর্মীকেই মাঠে পাওয়া যায় না। একই চিত্র শুধু ইউনিয়ন পর্যায় নয় খোদ জেলা পর্যায়েও। জেলা কার্যালয়ে কয়েকদিন গিয়েও পাওয়া যায়নি হিসাব বিভাগের কোন কর্মকর্তাকে।

নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, জেলা অফিসে জনবল সংখ্যা ১৯ জন। উপস্থিত থাকেন মাত্র ৭-৮ জন। আর হিসাব বিভাগের লোকজন মন চাইলে অফিসে আসেন, না চাইলে নাই। তারা বেতন ভাতা নেওয়ার সময় শুধুমাত্র অফিসে আসেন। 

নারগুন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নূরে আক্তার বানু দুপুর ১২টায় বন্ধ করে বাড়িতে চলে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তার কাছে এখন কয়টা বাজে জানতে চাইলে বলেন, দুপুর ১২টা। এখনই কেন বন্ধ করেছেন? অফিসে কেউ নাই। রোগীও আসে না, এই জায়গায় একাই থাকতে ভয় লাগে। ওই কেন্দ্রের পরিদর্শক শামীমের হাজিরা খাতাতেও স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।

শিবগঞ্জ (জামালপুর) উপস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নৈশপ্রহরীর কাছে অফিস দেরিতে খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমি রাতেও ডিউটি করি। সেজন্য খুলতে একটু দেরি হয়। 

পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হারুন-অর রশীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রশিক্ষণে আছি। 

এফডাবিউএ শাহেদা আক্তারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি শহরে এসেছি। ছুটি নিয়ে গেছেন কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে এসেছি। সালন্দর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জীবন দেবনাথের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রশিক্ষণে আছি। নারগুন গ্রামের রোজিনা বেগম নামে একজন বলেন, আগে পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে মহিলা কর্মীরা নিয়মিত আসতো। এখন কেউ আসেন না। ফলে, অনেক মা বিভিন্ন রকম সমস্যায় ভুগছেন এবং স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই কথা বলেন হাসিনা, রহিমাসহ অনেকে।

জামালপুর ইউনিয়নের পারপুগী গ্রামের রাহেলা বেগম বলেন, আজকাল পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের দেখাই মিলে না। গাজী গ্রামের রেনুবালা বলেন, মায়েদের সমস্যাগুলো আগে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের কাছে বলতে পারতাম। এখন তো আসেই না। যার কারণে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। 

ফাড়াবাড়ি এলাকার আনোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে আর আসব না, ডাক্তার পাওয়া যায় না, ঔষধও পাওয়া যায় না। 

ঠাকুরগাঁও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক দেওয়ান মোর্শেদ কামাল বলেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জন্ম হয়েছে জনসংখ্যা সীমিত রাখার জন্য। মানুষের চাহিদার সাথে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সময়ের আগে বন্ধের বিষয়টি কমন নয়। ছুটি না নিয়ে যাওয়াটা ব্যক্তিগত ব্যাপার এর দায় তাকেই নিতে হবে।

জাগরণ/এমএইচ
 

আরও পড়ুন