• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০, ০৪:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০, ০৪:১৯ পিএম

সাড়ে ৯শ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি

সুনামগঞ্জে বন্যা ভোগান্তিতে ২৫ লাখ মানুষ

সুনামগঞ্জে বন্যা ভোগান্তিতে ২৫ লাখ মানুষ
বন্যার পানিতে রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ছবি-জাগরণ

টানা তিনবারের পাহাড়ী ঢল ও বন্যায় সুনামগঞ্জে ১১ উপজেলায় প্রায় সাড়ে নয়শত কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। প্রথম দুই দফা বন্যায় জেলা সদরের সঙ্গে ছাতক-দোয়ারাবাজার, জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর এবং পৌর শহরের প্রায় সকল রাস্তাঘাটই ব্যাপক ভাঙ্গন ও বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলার ২৫ লাখ মানুষকে। 

বিশেষ করে জেলা সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, জামালগঞ্জ ৬ উপজেলার মানুষ সড়ক যোগাযোগ করতে না পেরে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

ভোক্তভুগীরা জানান, বন্যা ও পাহাড়ী ঢলের কারণে জেলা শহরের সাথে সংযুক্ত সড়কগুলোর বেশীর ভাগ ভেঙ্গে যাওয়ায় আমরা দূর্ভোগে আছি। আগে যে সময় ও যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতো এখন তার চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশী সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। দ্রুত এগুলো মেরামত করা প্রয়োজন। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা ও গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসাসহ জরুরী প্রয়োজনে জেলা সদর হাসপাতালে যেতে পারছি না। আমাদের এই দূর্ভোগ শেষ করতে সরকারের পক্ষ থেকে যেন অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ী ঢল আর বন্যার কারণে জেলার এগারো উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনস্থ সড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এ বন্যায় শুধু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) ৯০০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। তম্মধ্যে জেলার মোট ২২টি স্থানে স্রোতের তোড়ে সড়ক ভেঙ্গে সড়কপথের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ৪০টি ব্রিজ ও কালভার্টের সংযোগস্থলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং হাওরপাড়ে ঢেউয়ে অন্তত ৩০টির বেশি ভিলেজ প্রটেকশন দেয়ালে সমস্যা দেখা দিয়েছে, কোনোটি আবার পুরো ভেঙ্গে গেছে।
 
সুনামগঞ্জ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জানায়, জেলার মোট ৯০০ কিলোমিটারের মতো গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি সম্পূর্ণ নেমে গেলেও এখন পর্যন্ত সড়কগুলোতে যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে সড়ক মেরামত বাবদ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। 

সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম জেলায় পরপর তিন দফা বন্যায় অপূরণীয় ক্ষতির কথা স্বীকার করে বলেন, এলজিইডির মোট চার হাজার ৬৯০ কিলোমিটার গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়ক আছে। তৃতীয় দফা বন্যায় জেলার প্রায় ৯০০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বেশির ভাগ সড়কের ভাঙ্গন মেরামত করা যাচ্ছে না। যাত্রী সাধারণের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বুঝতে পেরেও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। জরুরী মেরামত করার জন্য আমাদের পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান মহোদয়কে অবহিত করেছি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অবগত আছেন।  

সুনামগঞ্জ, ছাতক, জগন্নাথপুর ও দিরাই পৌরশহর এলাকায় ও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি সড়কের ওপর থাকায় সড়কের বিটুমিন উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বালু ও পাথর সরে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে স্বাভাবিক যান চলাচলে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। একইভাবে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কের মারাত্মক  ক্ষতি হয়েছে। এ রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত ও সংস্কার করতে অন্তত ৪০ কোটি টাকা প্রয়োজন। বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পত্র পাঠানো হয়েছে। 

জাগরণ/এমএইচ
 

আরও পড়ুন