• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০, ১০:৫৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০, ১০:৫৪ এএম

নওগাঁয় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ

নওগাঁয় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ
বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ

নওগাঁ জেলার রাণীনগরে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আধুনিক এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হয়েছে সামিউল আলম খান তুষার নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবক। ইতিমধ্যেই মাছ চাষ করে তুষার এক অনন্য দৃষ্টান্তর স্থাপন করেছে এলাকায়। 

আমাদের দেশে দিন দিন নতুন করে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করতে গিয়ে কৃষি জমির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। এমন সংকটকালীন সময়ে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রযুক্তি নতুন সম্ভাবনা বয়ে এনেছে। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে কোনো পুকুর, খাল-বিল কিংম্বা নদী-নালার প্রয়োজন হয় না। বরং বাড়ির পাশের খলিয়ানে অথবা উঠানে ইট-সিমেন্ট দিয়ে ট্যাংকি তৈরি করে অল্প জায়গায় সারা বছরে মাছ চাষ করা যায়। এমনকি গৃহবধূরা পরিবারের কাজের পাশাপাশি নিজ বাড়িতে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। সামিউল আলম তুষার খান নিজ এলাকাসহ দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে বিশাল ভূমিকা রাখছে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে।

জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল খান পাড়া গ্রামের মাহবুর আলম খানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে সামিউল আলম খান তুষার। ডিজিটাল প্রযুক্তির বদৌলতে ইউটিউবে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখে উৎসাহী হয়ে সাবেক এক মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলায় তিন দিনের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির পিছনে না দৌড়ে বাবা মাহবুবুর আলমের সহযোগিতায় পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়তি কিছু আয়ের লক্ষে স্বল্প পরিসরে নিজ বাড়িতে প্রথম এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করে। বাড়ির পাশের খলিয়ানে ২০১৯ সালের শেষের দিকে দুটি ট্যাংকিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করে পরীক্ষামূলকভাবে শিং মাছের চাষ শুরু করে এবং পরবর্তী সময়ে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তুষার।

সামিউল আলম খান তুষার বলেন খুব সহজেই যে কেউ অল্প পুজিতে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। এমনকি গৃহবধূরা প্রশিক্ষণ নিয়ে পরিবারের কাজের পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। আগামীতে সরকারি সহযোগীতা পেলে আমি আরো বড় পরিসরে এই প্রকল্পকে বিস্তৃত করতে চাই। চীন, ইন্দোনেশিয়া এবং পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ পদ্ধতিতে মাছের জন্য খাবার খুব কম দিতে হয়। বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছের মলমূত্র এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করে তা পুনরায় মাছকে খাওয়ানো যায়। এতে খাবারের খরচ অনেক কমে যায়।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় বলেন, বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ লাভজনক। তবে আমাদের দেশে এর প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার এখনো শুরু হয়নি। সামিউল ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাছের চাষ শুরু করেছে। আমরা তুষারকে যথাযথ পরামর্শ দিয়ে আসছি। যে কেউ এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। তবে আগামীতে এই পদ্ধতি মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে আমি আশাবাদী।

জাগরণ/আরএফ/এমআর