• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০, ০৯:১২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০, ০১:০২ পিএম

এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণ

অভিযুক্তদের পরিচয় মিলেছে, চলছে গ্রেফতার অভিযান

অভিযুক্তদের পরিচয় মিলেছে, চলছে গ্রেফতার অভিযান
সিলেট এমসি কলেজের গৃহবধূ ধর্ষনের ঘটনায় জড়িত ৬ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র ।

সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের পরিচয় বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এদিকে বর্বর এই ধর্ষনকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। যার এক পর্যায়ে কলেজের ছাত্রাবাসগুলোতে অভিযান পরিচালনাকালে সাইফুর রহমান নামের এক অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীর রুম থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার হয় বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

সিলেট শাহপরাণ থানা পুলিশের তথ্য মতে, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ৫/৬ জন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য নিশ্চিত করেছে থানা পুলিশ।

দৈনিক জাগরণের স্থানীয় সংবাদ প্রতিনিধির প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে জানা যায়, ধর্ষনকাণ্ডের অভিযুক্তরা হলেন, এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগে মস্টার্স অধ্যায়নরত ছাত্রলীগ নেতা শাহ মাহবুবুর রহমান রণি, একই শ্রেণীতে অধ্যয়নরত আরেক ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম এবং একই কলেজের অপর দুই ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান ও অর্জুন। তাদের সহযোগী অপর দুইজন বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।

এদের মধ্যে সাইফুর রহমানের বাড়ি বালাগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি দিরাইয়ে, মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়, অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জে, রণি হবিগঞ্জের এবং তারেক জগন্নাথপুরের বাসিন্দা।

এদিকে শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম জানান, আমরা রাতে এমসি কলেজের হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে এক ছাত্রের রুম থেকে একটি পাইপগান, চারটি রামদা ও একটি চাকুসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি অস্ত্র ও তদন্ত কাজে প্রাসঙ্গিক এমন আরো বেশকিছু জিনিস উদ্ধার করি। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সর্বশেষ তথ্যানুসারে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে তাদের গ্রেফতারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে শাহপরাণ থানা সূত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যান ওই গৃহবধূ। এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে তরুণীর স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য এমসি কলেজের মূল গেটের বাইরে বের হন। এ সময় কলেজ ও স্থানীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী সেই গৃহবধূকে জোরপূর্বক তুলে নেয়ার চেষ্টা করলে তার স্বামী জানায়। এক পর্যায়ে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়। সেখানে স্বামীকে বেঁধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পর্যায়ক্রমে সেই গৃহবধূর ওপর পাশবিক বর্বরতা চালায়। পরে রাত ১০টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পৈশাচিক এই ধর্ষনকাণ্ডের শিকার ঐ গৃহবধূ ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে শাহপরাণ থানা পুলিশ।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানের মানক্ষুণ্ন হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। রাতারাতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশের মানুষ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান।

এসকে

আরও পড়ুন