• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০, ১২:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০, ১২:০০ পিএম

বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলা

বাবার সঙ্গে আদলতে মিন্নি, রায় ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার

বাবার সঙ্গে আদলতে মিন্নি, রায় ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার
বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের মোটরসাইকেলে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি - সংগৃহিত

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘিরে আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জজ আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। আদালত পাড়ায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান সকাল সোয়া ৭টার দিকেই কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে এসেছেন। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের তল্লাশি করে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

অপরদিকে সকাল ৯টার আগে আগে রিফাতের স্ত্রী, এ মামলার অন্যতম আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের মোটরসাইকেলে করে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। মামলার আসামিদের মধ্যে কেবল তিনিই জামিনে আছেন।

মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফসহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও রায়ের জন্য উপস্থিত হয়েছেন আদালতে।

মামলার ১ নম্বর আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজীসহ কারাগারে থাকা আসামিদেরও আদালতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। মামলার ১০ আসামির মধ্যে একজন পলাতক।

জোলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কারাগারে থাকা আট আসামিকে সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আদালতে আনা হবে। সাড়ে ১১টার দিকে রায় হতে পারে বলে আমরা আশা করছি।

প্রায় ১৫ মাস আগে পুরো বাংলাদেশকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল প্রকাশ্যে দিবালোকে বরগুনার তরুন রিফতকে বর্বরভাবে কুপিয়ে হত্যা করার সেই নারকীয় দৃশ্য। ওই হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ১০ জনের বিচার চলে জজ আদালতে। বাকি ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বরগুনার শিশু আদালতে আলাদাভাবে তাদের বিচার চলছে।

১৬ সেপ্টেম্বর যুক্ততর্ক শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান প্রাপ্তবয়স্ক দশ আসামির রায়ের জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩) আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), হাসান (১৯), মুসা (২২), আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।

এদের মধ্যে মুসা পলাতক, মিন্নি আছেন জামিনে। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
 
মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মিন্নিসহ সব আসামির শাস্তি চাই আমরা। দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আমাদের আস্থা আছে। আদালত রিফাতের খুনের সঙ্গে জড়িতদের এমন শাস্তি দিক যাতে আমরা স্বস্তি পাই।

এদিকে সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়ে রিফাতের মা ডেইজি আক্তার বলেন, আমি সব আসামির ফাঁসি চাই। এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড যেন আর না হয়। আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।

অন্যদিকে রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে নির্দোষ দাবি করছে তার বাবা-মা। মিন্নির নাম এ মামলার এজাহারে ছিল এক নম্বর সাক্ষী হিসেবে। পুলিশের তদন্তের পর তাকে আসামি করা হয়।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আমরা আসলেই হয়রানির শিকার। জীবন বাজি রেখে মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অথচ মিন্নি প্রধান সাক্ষী থেকে এখন আসামির কাঠগড়ায়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে বলে আমরা আশা করি।

একই প্রত্যাশা মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলামেরও। তিনি বলেন, যে যুক্তি আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি, তা খণ্ডন করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। মিন্নি যে নির্দোষ এটা আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন আমাদের আইনজীবীরা। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, মিন্নি এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাবেন।

চাঞ্চল্য এই হত্যাকাণ্ডের রায় শোনার অপেক্ষায় অধীর অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দেশ।