• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২০, ০৭:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২১, ২০২০, ০৭:২১ পিএম

খুচরা বাজারে আলুর দাম ৩৫ টাকা

দাম নির্ধারণ করায় ক্ষুব্ধ আলুচাষীরা

দাম নির্ধারণ করায় ক্ষুব্ধ আলুচাষীরা

আলু চাষে দেশে অন্যতম জেলা হিসেবে পরিচিত মুন্সীগঞ্জ। এ জেলার ৬ টি উপজেলায় ব্যাপক আলু চাষ হয়। খুচরা বাজারে আলুর দাম ৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। সিরাজদিখানে আলুচাষীদের বিরুপ প্রতিক্রিয়া। তাদের দাবি পাইকারী বাজারে ৩৫ টাকা করার জন্য। বিগত দিনে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ও অনেক কৃষক ঋণগ্রস্ত। অনেকে দেউলিয়া, ঋণের দায়ে অনেকে এলাকা ছাড়া। দীর্ঘদিনে তারা লাভের মুখ দেখে নাই। ভিটে মাটি বিক্রি করে আলুচাষ করেছে অনেকে। কৃষিমন্ত্রী ও ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতি পুনঃবিবেচনার কথা কৃষকদের পক্ষ থেকে উঠে এসেছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কারণে যদি কৃষকরা বিপাকে পরে তবে আগামীতে আলু চাষে আগ্রহ হারাবে বলে অনেক কৃষকের দাবি। বিএডিসি আলু সরকার উৎপাদন করে সেখানে প্রতি কেজি কত খরচ পরে, ভর্তুকি কেন দেয় সরকার, এমন প্রশ্ন আরো অনেক কৃষকের। 

সিরাজদিখান উপজেলায় ১০টি কোল্ড স্টোর রয়েছে। এখনো সেখানে কৃষকদের বেশ আলু রয়েছে। বিভিন্ন কোল্ড স্টোর ও এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এখন আলুর শেষ পর্যায়। তবে যে পরিমান আলু রয়েছে অর্ধেকটাই বীজ আলু। আর বাকিটা চাইর আলু ও খাওয়ার আলু। 

এ বিষয়ে বয়রাগাদী ইউপি সদস্য আলুচাষী রফিকুল ইসলাম পাখি জানান, আমার ওয়ার্ডে ১০/১৫ জন কৃষক ব্যাংকে ঋণের দায়ে মামলা খাইছে। সেই সাথে মামলা হওয়ায় অতিরিক্ত ৪ হাজার ১১০ টাকা করে জরিমানা করা হইছে। 

বালুচর ইউনিয়নের আলুচাষী মাসুদ রানা জানান, বিগত দিনে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হইছি, চালানের অর্ধেকও পাই নাই। অনেকে দেউলিয়া হইছে, ঋণের দায়ে অনেকে এলাকা থেকে পালাইছে। অনেকে মনে করে স্টোরে যে আলু আছে এগুলো সিন্ডিকেটের হাতে আসলে এ তথ্য সঠিক না, সমস্ত আলু কৃষকের। এখানে কিছু বীজ আলু ও কিছু খাওয়ার আলু আছে। মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এখন যদি কৃষকরা বিপাকে পরে তবে আগামীতে আলু চাষে কৃষকের অনিহা আসবে। আগ্রহ হারায় ফেললে ভবিষ্যতে দেশে আলুতে আরো ক্ষতি হবে। বিগত দিনে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আলু চাষে মুখ ফিরায় নিছে। এ বছর ৪০ টাকা বা ৫০ টাকা খুচরা বাজারে বিক্রি হলে আহামরি কিছু না। একবার ২০০৮ বা ৯ এ ৩০/৩৫ টাকা হইছিল।

বয়রাগাদী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলুচাষী মো. বাচ্চু দেওয়ান জানান, কৃষকের উপর এমন চাপ সঠিক না। আমরা কি আলু সস্তায় হওয়াইতে পারছি যে সস্তায় খাওয়াইবো। হাজার হাজার কৃষক আলুতে ক্ষতিগ্রস্ত আছে। ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলুচাষী ভবন দাস জানান, আমরা নিঃস্ব হয়েছি পর পর কয়েক বছর্ তারপরও এই পেশা ছাড়ি নাই, ভিটা মাটি বেইচ্চা, ঋণ কইরা প্রতি বছর আলু চাষ করছি। এবার দুইটা পয়সার মুখ দেখতাম সেইখানেও বাধা। ব্যাংকের ঋণতো আমাদের মওকুফ হয় না। মধ্যপাড়া ইউনিয়নের কাকালদী গ্রামের কৃষক দুলাল জানান, এর আগে আমরা বছরের পর বছর দফায় দফায় লোকসান গুনেছি। গত বছর ১০ টাকা কেজি বিক্রি করে আমাদের মাত্র ১ টাকা লাভ হয়েছে কেজিতে। এবার শেষ সময়ে একটু লাভের মুখ দেখছিলাম তার মধ্যে বাধা।