• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২০, ০৬:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৩, ২০২০, ০৬:৫১ পিএম

দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনেই আটকে আছে দুইবছর

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনেই আটকে আছে দুইবছর

শুরু হওয়ার আগেই থমকে আছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের একাডেমিক ভবন কাম প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজ। প্রায় দুই বছর ধরে নির্মাণ কাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ উপজেলার সচেতন মহল। জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের একান্ত প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনো কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পায় দোয়ারাবাজার উপজেলাবাসী। 

আশপাশে কোনো কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় সুদীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে এখানকার শিক্ষার্থীদেরকে জেলাশহরের বাইরে দূরবর্তী মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে হচ্ছে। অনেক পরিবারের শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন থাকা স্বত্ত্বেও দূরবর্তী প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহের আর্থিক সামর্থ্য ও সুযোগ সুবিধা না থাকার দরুণ শুরুতেই স্বপ্ন ভেস্তে যাচ্ছে। 

২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর উপজেলার সুরমা ইউনিয়েনের সাইডিং সংলগ্ন সুরমা নদী বিধৌত হিজলতলায় দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ৫ তলা ভিত বিশিষ্ট ৫ তলা একাডেমিক ভবন কাম প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ভাওয়াল কন্সট্রাকশন নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সময় পর উপজেলার সর্বপ্রথম ও একমাত্র কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজকে ঘিরে উপজেলার কয়েক সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রকৌশল অফিসের নানান তালবাহানায় দুই বছর ধরে কাজ বন্ধ থাকায় কারিগরি শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে। নির্ধারিত দুই বছর মেয়াদি সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনোব্দি কাজ শুরুই হয়নি।

নানান অজুহাত দেখিয়ে টানা প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদার নিজে না এসে তার প্রতিনিধির মাধ্যমে দায়সারা ভাবে কাজ করান। যেকারণে শুরুতেই কাজের রোল ও মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কাজের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করলেই চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছ। শিক্ষা প্রকৌশল অফিস কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকলেও তাদের কাউকেই সরেজমিনে কাজের দেখভাল করতে তেমন দেখা যায়না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বীরপ্রতীক জানান, দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ এতোদিনে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কাজের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছেনা। ফলে উপজেলার শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহ থাকা স্বত্ত্বেও কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ হারাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানাই। ঠিকাদারের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান জানান, করোনা, বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। নতুন করে কাজের সময়সীমা বাড়ানো হবে।
এব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা জানান, জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটা জটিলতা ছিলো। কয়েকদিন আগে সবাইকে নিয়ে এটার নিষ্পত্তি হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। 

কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম জানান, শিঘ্রই কাজ শুরু হবে। দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সামনের দিকের সামান্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। এটি নিয়ে আইনি জটিলতা আছে, এছাড়াও করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ শুর করা যায়নি।