• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২০, ০৬:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৩, ২০২০, ০৬:৫৫ পিএম

পাঁচ বছরেও সংস্কার হয়নি সেতু

পাঁচ বছরেও সংস্কার হয়নি সেতু

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের খালের পাঁচ বছর ধরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে সেতু। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় তিন বছরের মাথায় ধসে পড়ে সেতুটি। এরপর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটি আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে উপজেলার তিনটি গ্রামের মানুষ চলাচলে আগের মতোই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। 

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ঝিনাইগাতীর মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের কালীবাড়ি-কুড়ালিয়াকান্দা সড়কের আলকাছের বাড়ির কাছে খালের ওপর ৩৩ ফুট দীর্ঘ একটি আরসিসি সেতু নির্মাণ করা হয়। ২১ লাখ ২০ হাজার ৮১৮ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে মেসার্স আলবেরুনী কনস্ট্রাকশন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ২০১১ সালের ২৫ ডিসেম্বর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু ও ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করেন। কিন্তু নির্মাণকাজের তিন বছর অতিক্রান্ত না হতেই সেতুটি ধসে যায়। বর্তমানে এটি খালের ওপর বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে আছে। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দরপত্রের শর্ত না মেনে সেতুটিতে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল। সেতুর বেজমেন্টের কাজও যথাযথভাবে করা হয়নি বলে তারা মনে করেন। ফলে নির্মাণের তিন বছর অতিক্রান্ত না হতেই সেতুটি ধসে পড়ে। এতে কালীবাড়ি, বানিয়াপাড়া ও কুড়ালিয়াকান্দা গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বানিয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মালিঝি নদীর শাখা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেতুর সব অবকাঠামো ভেঙে গেছে। সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের সংযোগ সড়কের মাটি ধসে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী সেতুর পূর্ব পাশের ধানখেতের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে। বানিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক জুলহাস উদ্দিন বলেন, পাঁচ বছর ধরে সেতুটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে শুকনা মৌসুমে অন্যের জমির ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া চলাচলের আর কোনো উপায় থাকে না। বিশেষ করে চলতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের সময় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। 

একই গ্রামের কৃষক লাল মিয়া বলেন, বানিয়াপাড়াসহ তিনটি গ্রামে উৎপাদিত ফসল ও কৃষিপণ্য বাজারজাত করার জন্য খালটি পার হওয়া ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই। সেতুটি নির্মাণের পর এলাকাবাসী খুব খুশি হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণের মাত্র তিন বছরের মধ্যে এটি ধসে যাওয়ায় এলাকাবাসীর দুঃখ আর কষ্ট রয়েই গেল।

মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আক্তার হোসেন বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের সময় এলাকাবাসী চরম ঝুঁকি নিয়ে নৌকা ও কলার ভেলায় খাল পার হয়ে যাতায়াত করেছে। তাই এখানে একটি ১০০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, তিনি এ উপজেলায় যোগদানের অনেক আগেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল ও ধসে গিয়েছিল। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। খালটির দৈর্ঘ্য বিবেচনা করে এখানে ১০০ ফুটের বেশি দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও (ইউএনও) বিষয়টি অবহিত করেছেন।

ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ওই খালের ওপর এলাকাবাসীর চাহিদাসম্পন্ন সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।