• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২০, ১১:২৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৬, ২০২০, ১১:৩১ এএম

শুধু চাল খেয়েই ক্ষুধা নিবারণ করছে ৪ শতাধিক বানর 

শুধু চাল খেয়েই ক্ষুধা নিবারণ করছে ৪ শতাধিক বানর 

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়ায় সংরক্ষিত সন্তোষপুর বনাঞ্চলের ৪ শতাধিক বানর মহামারি করোনার কারণে ৬ মাস ধরে শুধু চাল খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে। নতুন করে জন্ম নেওয়া অর্ধশতাধিক বানরের বাচ্ছাসহ মা বানর অপুষ্টিতে ভুগছে। বনে স্থায়ী জলাধার না থাকায় শুষ্ক মৌসুমের ৬ মাস বানরগুলো পানীয় জলের অভাবে ভোগে থাকে। যার ফলে বানারগুলো চর্মরোগে ভুগছে। 

সংরক্ষিত সন্তোষপুর বনাঞ্চলে প্রায় ৪ শতাধিক বানর রয়েছে। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে বনে ভ্রাম্যমান হিসাবে বসা দোকানপাটাগুলো বন্ধ করে দেয় বন বিভাগ। দোকানপাট বন্ধ করে দেয়ায় বানরগুলো ৬ মাস ধরে শুধু চাল খেয়ে ক্ষুধার জ্বালা নিরারণ করছে। করোনার আগে বনে ভ্রমনে আসা দর্শনার্থীরা দোকানগুলো থেকে কলা, বিস্কুটসহ বিভিন্ন সামগ্রী কিনে বানরকে খাবার দিতেন। কিছু দিন আগে বনে বসা দোকান গুলো বনবিভাগ খুলে দিলেও বর্ষায় সড়ক যোগাযোগ খারাপ থাকায় আগের মত দর্শনার্থী আর বানর দেখতে আসছে না।  

৪ শতাধিক বানরের মধ্যে এ বছর ৫০ টির মত বানর বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। বানরকে খাবার হিসাবে চাল দেয়ায় বাচ্চা বানর ও দুধ দেয়া মা বানরগুলো বেশি অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। চাল বানরের শরীরের শক্তি জোগালেও পুষ্টির চাহিদা মিটছে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন প্রাণি বিশেষজ্ঞরা। 

বন এলাকার স্থায়ীয় যুবক মাসুদ জানান, বনে আগের মত বানরের খাবার নেই। এক সময় এ বনে বানরের প্রচুর খাবার ছিল। বনখেকোরা বনের গাছ অবাধে কেটে ফেলায় বানরের খাবার সংকট এখন প্রকট। আশে পাশে বনের জমিতে আনারস পেঁপে, কলা চাষ করার হলেও পাহাড়াদার থাকায় বানরগুলো আবাদ করা আনারস, কলা, পেঁপে বাগানের ধারে কাছেও যেতে পারে না। তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমানের এসব বাগনে বিষসহ নানান কীটনাশক প্রয়োগ করায় বানরগুলো ফলগুলো খায় না।  

বনের দোকানী আবু হানিফা জানান, করোনার শুরুর পর থেকে আমাদের দোকানগুলো বন বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছিল। কিছুদিন আগে দোকান খুলে দিলেও বর্ষায় সড়ক যোগাযোগ খারাপ থাকায় আগের মত দর্শনার্থী বনে বেড়াতে আসছে না। 

এ প্রসঙ্গে সন্তোষপুর বনবিট কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, চাল বানরের খাবার না হলেও ক্ষুধা মিটানোর জন্য দেয়া হয়। তাছাড়া বনে আগের মত প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠা ফলমূল না থাকায় সংকট এখন প্রকট। তবে বানরের জন্য করা পেয়ারা বাগানে থেকে বানর কিছুটা পেয়ারা খেয়ে থাকে। মাঝে ফলমূল কিনে খাওয়ানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে জলের চরম সংকট শিকার করে তিনি বলেন, একটি স্থায়ী জলাধার খনন করা হলে বানরের জলের চাহিদা মিটানো সম্ভব। 

ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান জানান, শুধু চাল খেয়ে বানরগুলো অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। এর বেশি প্রভাব পড়তে পারে বাচ্ছা বানরগুলো ও দুধ দেওয়া মা বানরগুলোর ওপর। চালের পাশাপাশি বানরের পুষ্টিকর খাবার যেমন কলাসহ ফলমূল দেওয়া হলে ভালো হয়।

জাগরণ/একে/এমআর