• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২১, ১২:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৫, ২০২১, ১২:৫৬ পিএম

আধুনিক হাসপাতালের ‘নাজুক’ দশা

আধুনিক হাসপাতালের ‘নাজুক’ দশা

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল। জেলার সাধারণ মানুষের একমাত্র প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র। হাসপাতালটি আড়াইশ শয্যার হলেও জনবল নেই ১০০ শয্যারও। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংকটও রয়েছে। এতে  কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালটি বর্তমানে আড়াইশ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। নির্মিত হয়েছে ৭ তলা ভবন। তবে ওই ভবনের অধিকাংশই এখন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাগজে-কলমে শয্যা সংখ্যা বাড়লেও কমেছে সেবার মান। বাস্তবে শয্যা সংখ্যা ২০০ হবে না। খালি রয়েছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও ৩য়-৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদ।

সূত্র জানায়, চিকিৎসকের ৩৭ পদের মধ্যে খালি পড়ে আছে ১৩টি। নার্সের ১৪০ পদের মধ্যে ৫৫টিই শূন্য। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদও ৩১টি খালি।

সরেজমিন দেখা যায়, দুটি এক্স-রে মেশিন থাকলেও একটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল। নেই এনআইসিইউ ও আইসিইউ। স্ক্যানু ওয়ার্ডে ১১টি ওয়ার্মার থাকলেও সচল ৭টি। একেকটি ওয়ার্মারে ১টি বাচ্চা রাখার কথা থাকলেও রাখা হয় ৪ জন করে। ১টি মাত্র ইনকিউবেটর, তা-ও প্রায় সময়ই থাকে অচল। দুটি ফটো থেরাপি থাকলেও সচল মাত্র ১টি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ দিনে স্ক্যানুতে মারা গেছে ২৩ নবজাতক। এর বাইরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে মারা গেছে আরো একজন।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রঘু দয়াল গ্রাম থেকে হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গোলক চক্রবর্তী নামে এক রোগী অভিযোগ করেন, তিনি এক্স-রে রুমে গেলে তাকে বলা হয় মেশিন নষ্ট। এ সময় তাকে প্রাইভেট ক্লিনিকে এক্স-রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার আরেক ভুক্তভোগী জহুর চান বিবি জানান, তিনি তার নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালের স্ক্যানু ওয়ার্ডে গেলেও ওয়ার্মার মেশিন সংকটের কারণে চিকিৎসা করাতে পারেননি।

পৌর নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক পীযুষ চক্রবর্তী জানান, হবিগঞ্জ জেলা সদরে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হয়েছে। হাসপাতালও ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। তারপরও এভাবে নবজাতকের মৃত্যু কাম্য নয়। নবজাতকের মৃত্যুর হার কমাতে এনআইসিইউর ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি। ভৌগোলিক কারণে এখানে বিভিন্ন এলাকার রোগী আসেন। কিন্তু যদি চিকিৎসা সুবিধা না বাড়ানো হয় তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। এর আগে এখানে আইসিইউ ও পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার কথা থাকলেও আমরা এর দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখছি না। পিসিআর ল্যাব না করায় নিয়োগপ্রাপ্ত জনবল অলস সময় পার করছেন।

হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, আমরা স্ক্যানুতে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এখন নিয়মিত দুজন ডাক্তার দায়িত্বে থাকেন। আগে তা-ও ছিল না। পাশাপাশি নিয়মিত মনিটরিং করছে এনজিও সংস্থা মা-মনি। যন্ত্রপাতির সমস্যা নিয়েও আমরা কাজ করছি। শিশু ওয়ার্ড ও স্ক্যানুকে সক্রিয় রাখতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।