• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০১৮, ০১:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২৪, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বাসা-বাড়িতে আগুন লাগার ব্যাপারে আগাম সতর্কতা নেবার উপায়

বাসা-বাড়িতে আগুন লাগার ব্যাপারে আগাম সতর্কতা নেবার উপায়

 

 

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী,বিগত ছয় বছরে সারাদেশে ৮৮হাজার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি। প্রাণহানি হয়েছে ১৪‘শ জন,আহত হয়েছে অন্তত ৫হাজার মানুষ।

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মতে, কিছু বিষয়ে সতর্কতা ও সচেতনতা অবলম্বন করলে আগুন সংক্রান্ত দুর্ঘটনার হার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা সম্ভব।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বাসাবাড়িতে আগুন সংক্রান্ত দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য কীরকম পূর্ব-প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে সে বিষয়ে বলেন-

বাসার বৈদ্যুতিক সংযোগ পরীক্ষা

আলী আহমেদ খান বলেন,‘আমাদের এটা বোঝা জরুরি যে বৈদ্যুতিক লাইন থেকে আগুন লাগতে পারে। কাজেই নিয়মিত বৈদ্যুতিক সংযোগ পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে সংযোগের মেয়াদ আছে কি না, তারও খোঁজ রাখা প্রয়োজন।’
ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগে ব্যবহার হওয়া যন্ত্রপাতি নিয়মিত পরীক্ষা করলে এ ধরণের দুর্ঘটনার হার কমানো সম্ভব বলে মনে করেন
তিনি ।
নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাসার বৈদ্যুতিক সংযোগসহ এলাকার বৈদ্যুতিক সংযোগের পরিদর্শন নিয়মতান্ত্রিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কি
না, সে বিষয়েও নাগরিকদের খোঁজ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন আলী আহমেদ খান।

গ্যাস সিলিন্ডারের সুষ্ঠু ব্যবহার

রান্নার জন্য ব্যবহৃত বহনযোগ্য গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার ঘটেছে। তিনি মনে করেন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়মাবলী সঠিকভাবে মেনে চললে এই ধরণের দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
‘প্রতিবার ব্যবহারের শেষে সিলিন্ডারের চাবি বন্ধ করা, সিলিন্ডার চালু করার আগে ঘরের দরজা-জানালা খুলে বায়ু চলাচলের সুযোগ
করে দেয়ার মত কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি’ বলেন তিনি ।

দাহ্য পদার্থ রান্নাঘর থেকে দূরে রাখা

আলী আহমেদ খান বলেন, ‘আগে গ্রামের বাসাবাড়িতে পাটখড়ি, কাঠ, তুলা জাতীয় জিনিস থাকতো। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ বাড়িতেই সিনথেটিক জাতীয় দ্রব্য,পারটেক্সের আসবাব থাকে যেগুলো দাহ্য পদার্থ।’
এসব দাহ্য পদার্থে আগুন লাগলে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও ধোঁয়া তৈরি করে এবং ধোঁয়ার প্রভাবেই অনেকসময় মানুষের মৃত্যু হয়; তাই
রান্নাঘর থেকে এধরণের জিনিসপত্র দূরে রাখার উপদেশ দেন তিনি।

প্রতি বাড়িতে অন্তত একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র

‘প্রত্যেক বাড়িতে অন্তত একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা অত্যন্ত জরুরি’ বলেন তিনি। বর্তমানে অনেক বাসাবাড়িতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও দেশের অধিকাংশ বাড়িতেই এটি দেখা যায় না।

দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা

আগুনের সতর্কতা হিসেবে সবসময় বাসায় বালি, পানি, দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি ফায়ার বিটার রাখার উপদেশ দেন তিনি।

যদি দুর্ঘটনা ঘটেই যায়,মানসিক দৃঢ়তা অটুট রাখা

তিনি বলেন,‘আগুন লেগে গেলে অনেকসময় দেখা যায় আশেপাশের মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। তখন তারা অগ্নি দূর্গতদের সামান্য সহায়তাও করতে পারে না। এরকম ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ দমকল বাহিনীকে খবর দেয়া প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আগুন নেভানো ও আগুন সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে থাকে। সেসব প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেও আগুন বিষয়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে বলে জানান তিনি।
সূত্র:বিবিসি বাংলা

সাইসে/বিএস