• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ১২:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ০১:০৩ পিএম

সাংবাদিক বুরহান হত্যার বিচার চান পরিবার

সাংবাদিক বুরহান হত্যার বিচার চান পরিবার

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত দোষীদের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সহিদ উদ্দিন এস্কান্দার কচি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের বড় ভাই নুরউদ্দিন বলেন, “ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বারবার আমাকে বাঁচান, প্লিজ ভাই আমাকে বাঁচান বলে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল বোরহান। কিন্তু উপস্থিত পুলিশ, রাজনৈতিক কর্মী কেউই তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।”

মুজাক্কির হত্যার ঘটনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় দেশের সব গণমাধ্যম পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা জানান।

মুজাক্কিরের বাবা নোয়াব আলী মাস্টার বলেন, “আমার ছেলে শুধু পড়ালেখা ও সাংবাদিকতাই করত না, সে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াত। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন আপনি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচার করেন তাহলে আমাদের চাওয়া পূরণ হবে।”

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুজাক্কিরের মা মমতাজ বেগম দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের বাবা, মা, বড় ভাই, বোনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি)  মেয়র কাদের মির্জার বিরুদ্ধে বিকেলে চাপরাশিরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা। মিছিলটি চাপরাশিরহাট বাজারে গেলে আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষকে দুই দিকে ধাওয়া করে এবং ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর কাদের মির্জার নেতৃত্বে শতাধিক অনুসারী মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে চাপরাশিরহাট বাজারে যান। একপর্যায়ে কাদের মির্জার সমর্থকরা বাদলের বাড়িতে হামলা ও গুলি চালান।

এ সময় দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সাংবাদিক মুজাক্কির গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। মুজাক্কিরসহ আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। বিকেলে মুজাক্কিরকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিন রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়।

এদিকে সাংবাদিক মুজাক্কিরের খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জেলা-উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তারা।

গত মঙ্গলবার ২৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের বাবা নোয়াব আলী মাস্টার বাদী হয়ে অজ্ঞাত একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ওই দিন রাতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। মামলার দায়িত্ব পেয়ে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্মকর্তারা। এ সময় পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন।