• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২১, ০৮:৫৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ১, ২০২১, ০৮:৫৪ এএম

ক্ষণে উচ্ছেদ, ক্ষণে দখল!

ক্ষণে উচ্ছেদ, ক্ষণে দখল!

ক্ষণে উচ্ছেদ করা হয়। আবার অদৃশ্য ক্ষমতার বদৌলতে ক্ষণেই দখল হয়ে যায়। এ যেন চোর-পুলিশ খেলা। দশ বছর ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল স্ট্যান্ড শতাধিক পিকআপ অবৈধভাবে দখল করে আছে। সড়ক দখলের ফলে প্রতিদিন এ স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। উচ্ছেদ-দখলের খেলায় যানবাহন যাত্রী ও স্থানীয় পথচারী প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জে গোলাকান্দাইল চৌরাস্তার পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল চৌরাস্তার ওপর শতাধিক পিকআপ অবৈধ দখলে নিয়েছে। ১০ বছর ধরে পিকআপগুলো সড়ক দখল করে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো ভূমিকা পালন করেননি। কালেভদ্রে লোক দেখানো উচ্ছেদ কিংবা সরিয়ে দেওয়া হলেও পুনরায় আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ মহাসড়ক দখল না করতে বললেও ট্রাফিক পুলিশ তাদের দখলে সহযোগিতা করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিটি পিকআপ থেকে ট্রাফিক পুলিশ ১৫শ’ টাকা করে মাসোহারা নেয়। সে হিসাবে একশ’ পিকআপ থেকে মাসে দেড় লাখ টাকা আদায় করা হয়। ফলে অবৈধ স্ট্যান্ড ক্ষণে উচ্ছেদ করা হলেও ক্ষণেই দখল হয়ে যায়। 

যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই স্টপেজে বাসের যাত্রী ওঠা-নামানোর কথা রয়েছে। কিন্তু পিকআপ দখল করে রাখায় যাত্রী ওঠা-নামানোর সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া পথচারী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। 

কথা হয় বাস চালক রজব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “এহানে বাসের যাত্রী নামানোর কতা ভাই। পিকআপওয়ালারা সড়কটাই দহল কইরা রাখছে।”

পথচারী শফিক মিয়া বলেন, “পিকআপের দখলের কারণে পথচারীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিন এখানে যানজট হচ্ছে।”

যানবাহন চালক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দশ বছরে কমপক্ষে ৭২ বার পিকআপের অবৈধ স্ট্যান্ড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিনে সরিয়ে দিলে রাতেই দখল হয়ে গেছে। আবার রাতে সরিয়ে দিলে দিনেই দখল হয়ে গেছে। অদৃশ্য ক্ষমতাবলে পিকআপ চালকরা মহাসড়ক দখল করে আসছে। তবে স্থানীয়রা এর জন্য ট্রাফিক পুলিশকেই দায়ী করছেন।  

সর্বশেষ গত বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন মজুমদারের নেতৃত্বে পিকআপ স্ট্যান্ডটি সরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতার বদৌলতে একদিন পরেই স্ট্যান্ডটি পিকআপ চালকরা দখলে নেয়।

কথা হয় পিকআপ স্ট্যান্ডের লাইনম্যান শফিউল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমরা লাইন ঠিক রাহি। এর বেশি কিছু জানি না।” টাকার প্রসঙ্গে টানতেই তিনি সটকে পড়েন। 

ভূলতা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মনির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত সেলফোনে যোগাযোগ করা হয়। প্রসঙ্গ টানতেই তিনি দুপুরের ভাত খাওয়ায় ব্যস্ত বলে ফোন রেখে দেন। 

ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, “এটা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব। তারপরও মহাসড়কের যানজট নিরসনে আমরা পিকআপ স্ট্যান্ড সরিয়ে দেই। গত বুধবারও সরিয়ে দিয়েছি।”