• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২১, ০৫:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৪, ২০২১, ০৫:৪৯ পিএম

বিনা অপরাধে ১৮মাস জেল খেটে অবশেষে মুক্তি

বিনা অপরাধে ১৮মাস জেল খেটে অবশেষে মুক্তি

কোনো অপরাধ করেননি। তবু জেল খাটতে হলো ১৮ মাস। শেষে মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক শরীফুল আলম ভূঁইয়া তাকে মুক্তির আদেশ দেন। ভুক্তভোগীর নাম হাসিনা বেগম। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার চৌধুরীপাড়া এলাকার হামিদ হোসেনের স্ত্রী। এ দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর সঙ্গে নামের মিল থাকায় তিনি ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে ছিলেন।

হাসিনা বেগমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, ‘নামের ভুলে হাসিনা বেগম অন্যের অপরাধের সাজা খাটছেন এ বিষয়টি সম্প্রতি আদালতের নজরে আনা হয়। আদালত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও কারাগার কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। দুটি প্রতিবেদনে সাজাপ্রাপ্ত হাসিনা আক্তার আর সাজা ভোগ করা হাসিনা বেগম একই আসামি নন বলে প্রতীয়মান হয়। পরে এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার) আদালত হাসিনা বেগমকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশের কপি এখনও হাতে পাইনি।’

কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের বাড়ি সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার একই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী। তাদের স্বামীর নাম এক হলেও বাবা-মায়ের নাম ভিন্ন ছিল।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জারটেক পুলিশ চেকপোস্ট এলাকা থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ হাসিনা আক্তার ও তার স্বামী হামিদ হোসেনকে আটক করা হয়। পরে এই ঘটনায় কর্ণফুলী থানার তৎকালীন এসআই সালাউদ্দিন জাহেদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ২৮(২)১৭, জিআর মামলা নম্বর ৫৭/১৭ ও দায়রা মামলা ৩৬৩৭/১২ দায়ের করা হয়। ওই মামলায় নয় মাস জেল খাটার পর একই বছরের ২৭ নভেম্বর উচ্চ আদালতের আদেশে কারাগার থেকে ছাড়া পায় তারা। ২০১৯ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর পঞ্চম আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সাজা হওয়ার পর ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে হাসিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় টেকনাফ থানা পুলিশ। এরপর থেকে তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন। সম্প্রতি বিষয়টি আদালতের নজরে নিয়ে আসার পর এ বিষয়ে টেকনাফ থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।

অনুসন্ধান শেষে তদন্ত প্রতিবেদনে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. খোরশেদ আলম দাবি করেন, বর্তমানে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে থাকা হাসিনা বেগম ও আগে গ্রেপ্তার হওয়া হাসিনা আক্তার এক নয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের স্বামী পালাতক থাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করা যায়নি। ওই এলাকায় হাসিনা আক্তার নামে কারও অস্তিত্ব নেই। এরপর মঙ্গলবার (৪ মে) সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ছবিযুক্ত বালামে প্রকৃত হাসিনা আক্তার ও হাসিনা বেগম একই আসামি নন বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। এরপর আদালত আজ তাকে মুক্তির আদেশ দেন।

আরও পড়ুন