• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২১, ১১:৩৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৫, ২০২১, ১১:৫৫ এএম

‘মে ফ্লাওয়ার’ ফোটে শুধু মে মাসে

‘মে ফ্লাওয়ার’ ফোটে শুধু মে মাসে

মে ফ্লাওয়ার—শুধু মে মাসে এই ফুল ফোটে। দেখলে মনে হয় পুরো একটি আস্ত ফুল। কিন্তু আসলে তা নয়। এই বৃত্তটি আস্ত একটি ফুল নয়। অনেকগুলো ফুলের সমন্বয়ে গঠিত অপূর্ব ‘মে ফ্লাওয়ার’। রক্তিম শোভায় উজ্জ্বল হয়ে প্রকৃতিতে দারুণ সৌন্দর্য ছড়ায় মে ফ্লাওয়ার। সারা বছর মাটির নিচে ঘুমিয়ে থাকে এই ফুলগাছের কাণ্ড। মে মাস এলেই সে কীভাবে যেন টের পেয়ে যায়! তারপর মাটি ভেদ করে মাথা উঁচু করে সেই বৃত্তাকার ফুলটি জানান দেয় তার আপন অস্তিত্ব।

প্রায় ২০০ ফুলের সমন্বয়ে গঠিত ‘মে ফ্লাওয়ার’। একেকটি ফুলের রয়েছে ৬টি পাপড়ি আর ৭টি পুংকেশর, যা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে রয়েছে। ফুলটির স্থায়িত্ব প্রায় মে মাসজুড়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন মুঠোফোনে দৈনিক জাগরণকে বলেন, মে ফ্লাওয়ারের ইংরেজি নাম Blood Lily। এর বৈজ্ঞানিক নাম Scadoxus multiflorus এবং পরিবার Amarllidaceae। এই গাছের বৈশিষ্ট্য হলো প্রথমে ফুল আসে, তারপর পাতা আসে। 

ফুলটির নামকরণ প্রসঙ্গে ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “এটার কাণ্ড সারা বছর মাটির নিচে থাকে। ইংরেজি মে মাসেই মাটি ভেদ করে ফুলটি বের হয়। মে মাসের শুরুতে ফোটে বলে এ-জাতীয় ফুলগুলোর নাম ‘মে ফ্লাওয়ার’ রাখা হয়েছে।” 
 
‘মে ফ্লাওয়ার’-এর দৃষ্টিনন্দন পুষ্পবৃত্ত। একটি বৃত্তে অসংখ্য ফুলের আমবেল জাতীয় গোলাকার পুষ্পবিন্যাস। এ বিন্যাসে ২০০টির মতো ফুল একত্রে মিশে থাকে। ফুলগুলোর মাথায় হলুদ রঙের পুংকেশর থাকে। গাছটির প্রকৃতি সম্পর্কে ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “এটি Bulbous Plant, অর্থাৎ পেঁয়াজের মতো অংশ থাকে নিচে। পেঁয়াজে যেভাবে অনেকগুলো আবরণ থাকে, তেমনি এই গাছটিতেও। এই আবরণগুলোকে ‘ভাল্বাস’ বলে।” 

ঔষধি গুণ সম্পর্কে ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “এটা কিন্তু ‘পয়জনাস প্লান্ট’ অর্থাৎ, কিছুটা বিষাক্তজাতীয় উদ্ভিদ। যেসব ছাগল বা ভেড়া এর পাতা খায় তাদের শরীরে কিন্তু বিষক্রিয়া হয়। আফ্রিকাতে এই বৃক্ষটির কষ বা রস ‘অ্যারো-পয়জন’ শিকারের তীরের মধ্যে লাগিয়ে মাছ ধরতে ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ওষুধেও এ বৃক্ষটি ব্যবহার করা হয়।”

দক্ষিণ আফ্রিকা, পশ্চিম আফ্রিকা, ঘানা, আইভরি কোস্ট, সাইবেরিয়া, মেক্সিকো প্রভৃতি দেশে এই মে ফ্লাওয়ারটির বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে। এটি আমাদের দেশের বনাঞ্চল বা বনভূমির উদ্ভিদ নয়। আমাদের দেশের শৌখিন বৃক্ষপ্রেমীরা এ ফুলটিকে টবে লাগান বলে জানান ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।