• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২১, ০৯:৪৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১১, ২০২১, ১২:১২ পিএম

‘আপনি যা পারেন লেখেন, দুর্নীতি করলে আমিই করছি’

‘আপনি যা পারেন লেখেন, দুর্নীতি করলে আমিই করছি’

নওগাঁর বদলগাছীতে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য নির্মিত ঘরের দেয়াল। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় বাড়ির দুটি দেয়াল ভেঙে পড়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিয়ল গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জীবনমান উন্নয়নে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় শেষ পর্যায়ে ৮টি ঘরের বরাদ্দ আসে। এ ৮টি ঘরের মধ্যে দুটি বরাদ্দ দেওয়া হয় জিয়ল গ্রামের মৃত জগেন্দ্র নাথ পাহানের ছেলে বিকাশ পাহান ও আকাশ পাহানকে। ঘর নির্মাণে ইট, মোটা বালু, বিট বালু ও ভিত খননে শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের জন্য টাকা দিতে হয়েছে উপকারভোগীদের।

গ্রামবাসীরা জানান, ঘর নির্মাণে ১ নম্বর ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ৩ নম্বর ইট। মসলা তৈরিতে নিম্নমানের স্থানীয় বিট বালুর সঙ্গে সিমেন্টের পরিমাণ দেওয়া হচ্ছে কম। ফলে নির্মাণাধীন অবস্থায় ভেঙে পড়ে ঘরের দেয়াল।

আকাশ পাহান বলেন, “ঠিকাদার ও মিস্ত্রিরা দুটি ঘরের জন্য ৮ হাজার ৩ নম্বর ইট ও নিম্নমানের বিট বালু আনেন। এছাড়া ২ হাজার ইট ও ১ গাড়ি ভালো মোটা বালু ও ১ গাড়ি বিট বালু আমাদের নিজের অর্থে কিনতে হয়। ঘরের ভিত কাটতে শ্রমিকের খরচ আমাদেরই দিতে হয়েছে। নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ও সিমেন্ট কম দেওয়ায় নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই দেয়াল ভেঙে পড়েছে।” 

বিকাশ পাহান জানান, পাশের উপজেলার সুমন নামের এক মিস্ত্রি ঘর দুটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। সহযোগী মিস্ত্রি ছিলেন স্থানীয় কৃষ্ণ পাহান। তারা আরও বলেন, নির্মাণ শেষের আগেই ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়ছে। পরে যে ঘর ভেঙে পড়বে না তার কী গ্যারান্টি আছে?

সুমন মিস্ত্রির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তার সহযোগী স্থানীয় কৃষ্ণ পাহান জানান, ঘর নির্মাণে ৩ নম্বর ইট, স্থানীয় বিট বালু, সিমেন্টের ভাগ কম দিয়ে গাঁথুনি করায় দেয়াল ভেঙে গেছে। এছাড়া আকাশ পাহানের ঘরের গাঁথুনি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করায় কয়েক দিন আগে তার ঘরের পশ্চিম দেয়াল হেলে গিয়ে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে তা মেরামত করা হয় বলে তিনি জানান।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব (পিআইও) মাহবুবুর রহমান বলেন, “এ ঘর নির্মাণে বরাদ্দের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রকল্প সভাপতি আলপনা ইয়াসমিন বলেন, “আপনি যা পারেন লিখেন। দুর্নীতি করলে আমিই করছি, উন্নয়ন করলেও আমিই করছি।”