• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২১, ০৪:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২২, ২০২১, ০৪:০৫ পিএম

কোরবানিযোগ্য পশুর সংকট নেই সিলেটে

কোরবানিযোগ্য পশুর সংকট নেই সিলেটে

আগামী জুলাই মাসের শেষদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা। পবিত্র ঈদুল আজহায় সিলেটে কোরবানির পশুর সংকট নেই। কোরবানির জন্য সিলেট বিভাগে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৫ টি পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। 

এর বাইরে ব্যক্তি পর্যায়ে আরও বেশ কিছু পশু রয়েছে ; যেগুলো এই হিসেবের বাইরে রয়েছে। সব মিলিয়ে সিলেটে যে পরিমাণ পশু রয়েছে তাতে দেশের বাইরে থেকে পশু আনা লাগবে না। তবে অন্যান্য জেলা থেকে কিছু পশু প্রতিবছরই সিলেটের বাজারে প্রবেশ করে আবার সিলেট থেকে কিছু পশু বিভিন্ন জেলাতে যায় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চোরাচালান রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।

আর খামারিরা বলছেন, বর্তমানে বিভাগে যে পরিমাণ পশু রয়েছে তাতে চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। কারণ বিভাগের তালিকাভূক্ত খামারিদের বাইরেও ব্যক্তি ও পরিবার পর্যায়ে অনেকেই কোরবানির জন্য দুই/একটি পশু লালন-পালন করে থাকেন। সেই হিসেবে তাদের কাছেও প্রচুর কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। তবে খামারিদের বিষয়টি লক্ষ্য রেখে ভারতীয় ও মিয়ানমারের পশু প্রবেশ বন্ধ রাখতে হবে। কারণ প্রতিবছরই শেষ মূহুর্তে দেখা যায় বিভিন্ন মাধ্যমে বাজারে ভারতীয় পশু প্রবেশ করে। এতে স্থানীয় খামারিরা লোকসানের মুখে পড়েন। তাই সীমান্তে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। যাতে করে কোনভাবেই ভারতীয় পশু বাজারে প্রবেশ করতে না পারে। 

খামারিরা আরও বলছেন- বাইরে থেকে গরু আসা বন্ধে এবার সীমান্ত এলাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। পাশাপাশি পশু ও পশু বিক্রেতার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ছিনতাই প্রতিরোধ এবং সীমান্তবর্তী জেলায় গবাদিপশুর অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিতে হবে।

এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন। তিনি জানান, পশু চোরাচালান বন্ধে সীমান্ত এলাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকবে। যাতে কোনভাবেই ভারতীয় পশু দেশে প্রবেশ করতে না পারে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, সিলেট সূত্রে জানা যায়- সিলেট বিভাগে ১২ হাজার ৯৭২ জন খামারির কাছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৫ টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ৫৮ হাজার ৭৯৩টি, মৌলভীবাজার জেলায় ৩২ হাজার ৫২৯টি, হবিগঞ্জে ৩৭ হাজার ৬২৮টি এবং সুনামগঞ্জে ৪৮ হাজার ৮৫৫টি কোরবানি যোগ্য পশু রয়েছে।

সিলেট জেলায় ষাঁড় ২৩ হাজার ৯২৬ টি, বলদ ১৬ হাজার ৭৩৫টি, গাভী ২ হাজার ৪৬৯টি, মহিষ ১ হাজার ১০টি, ছাগল ১১ হাজার ৭৪০টি, ভেড়া ২ হাজার ৭৪৮টি এবং অন্যান্য ১৬৫টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।

মৌলভীবাজারে ষাঁড় ১৬ হাজার ৭৮১টি, বলদ ২ হাজার ৮০৯টি, গাভী ২ হাজার ৮১টি, মহিষ ৮৩০টি, ছাগল ৯ হাজার ২৪৪টি এবং ৭৮৪টি ভেড়া মিলিয়ে ৩২ হাজার ৫২৯টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ষাঁড় ১৭ হাজার ২৬৩টি, বলদ ৫ হাজার ১৮টি, গাভী ৪ হাজার ৪৮৭টি, মহিষ ১১৮টি, ছাগল ৮ হাজার ৮৪৮টি এবং ভেড়া ৩ হাজার ৮৯৪টি রয়েছে।

আর সুনামগঞ্জে ষাঁড় ২৫ হাজার ৯৫৬টি, বলদ ৬ হাজার ৪৯০টি, গাভী ৫ হাজার ৮৩৯টি, মহিষ ৬৬৬টি, ছাগল ৫ হাজার ৭৬৮টি, ভেড়া ৪ হাজার ১৩৬টি মিলিয়ে ৪৮ হাজার ৮৫৫টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সিলেটের কর্মকর্তারা জানান, রাসায়নিক ব্যতীত সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করে গরু হৃষ্ট-পুষ্টকরণে খামারিদেরকে উৎসাহিত করার জন্য এবং এ কার্যক্রমে রাসায়নিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাঠপর্যায়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী বলেন, সিলেটে যে পরিমাণ পশু আছে তাতে চাহিদাপূরণ হয়ে যাবে। 

কারণ খামারিদের বাইরেও প্রচুর কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। গত বছর সিলেট জেলায় ১ লাখের মতো পশু কোরবানি হয়েছিল। এবারও হয়তো এরকমই হবে বলে আমরা ধারণা করছি। সেজন্য স্থানীয় ও খামারিদের কাছে থাকা কোরবানিযোগ্য পশু মিলিয়ে চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে। আর কিছু পশু অন্যান্য জেলা থেকেও সিলেটে আসবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন