• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২১, ১১:২৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১০, ২০২১, ১১:২৩ এএম

লামায় কাঁচা রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগ 

লামায় কাঁচা রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগ 

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ক্যয়াজুপাড়া বাজার সংলগ্ন মাইজ্জা মিয়ার বাড়ি থেকে আন্দারী জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ কাঁচা রাস্তা দুর্ভোগে স্থানীয়রা। শুষ্ক মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে কোনমতে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তা জুড়ে পানি আর কাদায় একাকার হয়ে যায়। তখন যাতায়াতের আর উপর্যুক্ত থাকেনা। কিন্তু বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও বাঙ্গালী পাড়ার তিন শতাধিক পরিবারের মানুষকে এ রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। 

গত ৪০ বছরেও এ রাস্তায় উন্নয়নের ছোঁয়া কিংবা পাকা না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে আছেন ওই পাড়াগুলোর শিশু শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন ফলের বাগান মালিক ও কৃষকরা উৎপাদিত ফসল বাজারজাত নিয়েও বিপাকে আছে এ রাস্তাটির কারণে। এছাড়া কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত ইউনিয়ন কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিতেও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। রাস্তাটি ব্রিক সলিং করা হলে একদিকে যেমন বিভিন্ন গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে রোগী ও কৃষি পণ্য বহনে বেগ পেতে হবে না। তাই রাস্তাটি ব্রিক সলিং করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী। 

এলাকাবাসী জানায়, ক্যয়াজুপাড়া বাজার সংলগ্ন মাইজ্জা মিয়ার বাড়ি থেকে আন্দারী জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের একটি রাস্তা রয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পদ্মমনি হেডম্যান পাড়া, দূর্যধন হেডম্যান পাড়া, চান্দামা ঝিরি ও কুতুবদিয়া পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের লোকজন যাতায়াত করে আসছে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে। এছাড়া এ রাস্তার উভয় পাশে বিভিন্ন ধরণের ফল ও বনজ বাগান গড়ে ওঠেছে। যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠির আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটায়। কিন্তু রাস্তাটি পাকা না করায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায়। এতে হাঁটু পরিমাণ জল কাদায় শিশু ও বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে স্বাভাবিকভাবে চলাচলের আর উপায় থাকে না। এ কারণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়েও যেতে পারে না। 

এ বিষয়ে সরই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি খুলু মিয়া (৭০) জানায়, দীর্ঘ বছর ধরে এ রাস্তাটি উন্নয়নের দাবি জানিয়ে আমরা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি বহুবার। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তাই হাঁটু পরিমাণ কর্দমাক্ত রাস্তা পাড়ি দিয়েই হাট-বাজার. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয় এলাকার মানুষকে। নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউ এর খোঁজ রাখেন না। তাই রাস্তাটি ব্রিক সলিং করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ উল আলম বলেন, রাস্তাটি ব্রিক সলিং করার জন্য এলজিইডিতে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু রাস্তাটি ৪০ বছর ধরে কাঁচাই রয়ে গেল। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ হয় যে, এই এলাকার স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীসহ ৫ গ্রামের মানুষ ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। জনদুর্ভোগ লাঘব করতে সড়কটি দ্রুত পাকা করা প্রয়োজন।

জাগরণ/এমআর